বিশ্বজিৎ দাস: অন লাইনে কেনাকাটা করেন? এবার সাবধান! পুজোর মুখে নয়া প্রতারণার জাল বিছিয়ে অনলাইন শপিং সহ নানা ক্ষেত্রে কম্পিউটার নজরদারির জাল বিছিয়ে গ্রাহকেরদের লক্ষ লক্ষ টাকা লুট করার এক বড়সড় চক্র ফাঁস করছে কলকাতা পুলিশ। আর এই গোটা প্রক্রিয়াই চালানো হত অনলাইন মার্কেটিং কিং বিখ্যাত বানিজ্যিক সংস্থা অ্যামাজনের (AMAZON) নাম করেই। ঘটনায় সুদুর অস্ট্রেলিয়া থেকে আসা একাধিক প্রতারক সহ মোট ২২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নিজেদের অ্যামাজনের কর্মচারী বলে পরিচয় দিয়ে দিনের পর দিন ধরে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ ছিল। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের একটি দল মঙ্গলবার গভীর রাতে কলকাতার নিউ আলিপুরে অভিযান চালায়। তাদের কাছে খবর ছিল, নিউ অলিপুরেই কল সেন্টারটি অবস্থিত।
পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়ে ওই ২২ জন ভুয়ো অ্যামাজনের কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করে। একজন পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, কোনও রকম বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই কল সেন্টার খুলেছিল অভিযুক্তরা। তিনি আরও জানান যে, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, নিজেদের অ্যামাজনের কর্মচারী বলে পরিচয় দিয়ে অভিযুক্তরা ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রটোকলের মাধ্যমে ক্রেতাদের সঙ্গে কথোপকথন করত।
পুলিশ আধিকারিক জানান, যে ২২ জন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক।অভিযুক্তরা টিমভিউয়ার এবং এনিডেস্কের মতো সফটওয়্যার ব্যবহার করে টার্গেট কম্পিউটারের অ্যাক্সেস চুরি করে সেগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করত। যাদের সঙ্গে প্রতারণা করতো, তাঁদের অস্ট্রেলিয়ান ডলার দিতে বাধ্য করা হত বলে জানালেন ওই পুলিশ আধিকারিক। পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের পর কল সেন্টার থেকে একাধিক কম্পিউটার এবং জাল নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করেছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, এ দিন তল্লাশি চালানোর সময় একাধিক কম্পিউটার অন ছিল, সেগুলি থেকে রীতিমতো কাজ চলছিল। জেরায় অভিযুক্তেরা জানিয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার একটি দলকে সামনে রেখে এই অপারেশন চালাতো তারা। নিজেদের AMAZON কর্মী বলে পরিচয় দিত।
এমনকি উপভোক্তাদের সিকিউরিটি সফটওয়্যার ক্র্যাশ করে গিয়েছে, ফলে গিফটের টাকা তারা পাবেন না, জানিয়ে হাতিয়ে নিত নানা তথ্য। এরপর কম্পিউটার হ্যাক করে সেখান থেকে হাতিয়ে নিত টাকা। উপরন্ত, সিকিউরিটি সিস্টেম ঠিক করে দেওয়ার জন্য চার্জ করত ৭০ থেকে ২০০ অস্ট্রেলিয়ার ডলার।
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নিউ আলিপুর থানায় আইটি অ্যাক্টের ৬৬, ৬৬সি, ৬৬ডি, ৮৪বি, ৪৩ ধারা-সহ ১২০বি, ৪১৯, ৪২০, ৪৬৫, ৪৬৭, ৪৬৮ এবং ৪৭১ ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। বিচারক বুধবার ধৃতদের আলিপুর আদালতে পেশ করা হলে ১৪ অগাস্ট পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।