নিজস্ব সংবাদদাতা: এক রোগীর চিকিৎসায় মারাত্মক গাফিলতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় খড়গপুরের একটি নার্সিংহোমকে ৩লক্ষ টাকা জরিমানা করল রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশন। তারই সাথে ওই নার্সিং হোমকে সতর্ক করা হয়েছে বলেও জানা গেছে। গ্রামীন খড়গপুরের সুলতানপুর বসন্তপুরে অবস্থিত ওই নার্সিং হোমের নাম মাতৃ আশীষ নার্সিংহোম। স্থানীয় ভাবে ওই নার্সিংহোমটিকে অনেকে কালী জানার নার্সিংহোম বলে ডেকে থাকেন। স্থানীয় হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক কালী জানার নাম থেকেই ওই নার্সিংহোমের পরিচিতি। এলাকায় যথেষ্ট সুনাম রয়েছে ওই নার্সিংহোমের।নার্সিংহোমের পাশাপাশি ওখানে মেটারনিটি সেন্টারও রয়েছে।
জানা গেছে ওই নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে ৩ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশন। এই নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল তাদের চিকিৎসার গাফিলতির কারনে এক ব্যক্তির ডান হাতের কনুই অবধি হারিয়েছেন। সূত্র মারফৎ জানা যায় গত ২৭ জানুয়ারি এক রোগীর বাঁ হাতের একটি আঙুলে সমস্যার জন্য অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। এই কারনে রোগীর ডান হাতে একটি ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। তারপরই শুরু হয় সমস্যা। ডান হাতের অবস্থা ক্রমশঃ এমনই জটিল হয়ে পড়ে যে রোগীর ডান হাতের কনুই পর্যন্ত অংশ বাদ দিতে হয়। বিষয়টি অভিযোগ দায়ের হয় জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দপ্তরে যা শেষ অবধি গড়ায় রাজ্য স্বাস্থ্য কমিশন অবধি। সমস্ত কিছু বিচার করে অভিযোগের সারবত্তা প্রমাণিত হওয়ায় পরই চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে ৩ লক্ষ টাকা জরিমানা করে স্বাস্থ্য কমিশন।
উল্লেখ্য শুধু এই নার্সিংহোমই নয়, রাজ্যের বিভিন্ন নার্সিংহোম ও বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে আসা এরকম প্রায় ডজন খানেক অভিযোগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে কমিশন। চিকিৎসায় গাফিলতিতে রোগীমৃত্যুর অভিযোগে মেডিকাকে (Medica) এক লক্ষ টাকা, বাঘাযতীনের আইরিস (IRIS) হাসপাতালকে এক লক্ষ টাকা জরিমানা করে রাজ্য স্বাস্থ্য কমিশন। AMRI ঢাকুরিয়া এবং মুকুন্দপুর, দুটি হাসপাতালকে তিনটি পৃথক অভিযোগে ২ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
শুধু চিকিৎসায় গাফিলতি নয়, অতিরিক্ত বিল কিংবা বিলে গরমিলের অভিযোগেও ব্যবস্থা নিয়েছে কমিশন। রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশনের বিধি না মেনে অতিরিক্ত বিল। আমরি হাসপাতালকে ৩টি মামলায় আড়াই লক্ষ টাকা জরিমান করা হয়েছিল। এই মামলার শুনানির শেষে স্বাস্থ্য কমিশন অতিরিক্ত বিলের অভিযোগে এই জরিমানা ধার্য করেছিল। অন্যদিকে চিকিৎসায় গাফিলতির কারণে আরও দুটি বেসরকারি হাসপাতালকে জরিমানা করা হয়েছিল।
আগষ্ট মাসেই চিকিৎসায় গাফিলতি, বেনজির সাজা দিয়েছিল স্বাস্থ্য কমিশন। জরিমানা নয়, বয়স্কদের হোমে মধ্যাহ্নভোজের সাজা। বেলভিউ নার্সিংহোমকে নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্য স্বাস্থ্য কমিশন। নার্সদের বিরুদ্ধে করোনা রোগিণীর চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠেছিল। মধ্যাহ্নভোজে থাকতে হবে অভিযুক্ত নার্স, রোগিণীর পরিবারকে। বেলভিউ নার্সিংহোমকে নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্য স্বাস্থ্য কমিশন।
এছাড়াও ইতিপূর্বে শিলিগুড়ির এভালোন হাসপাতালকে জরিমানা করা হয়েছিল। ২ লক্ষ ৩৪ হাজার টাকা জরিমানা করেছিল স্বাস্থ্য কমিশন। একই ওষুধের এক এক সময় এক এক রকম দাম নেওয়ার অভিযোগ ওঠে সেই হাসপাতালের বিরুদ্ধে। তাছাড়া কিছুদিন আগে বিধিভঙ্গ, অতিরিক্ত বিলের অভিযোগে কলকাতার চারটি বেসরকারি হাসপাতালকে জরিমানা করেছিল রাজ্য স্বাস্থ্য কমিশন। রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশনের বিধি না মেনে অতিরিক্ত বিল। আমরি হাসপাতালকে ৩টি মামলায় আড়াই লক্ষ টাকা জরিমান করা হয়েছিল। এই মামলার শুনানির শেষে স্বাস্থ্য কমিশন অতিরিক্ত বিলের অভিযোগে এই জরিমানা ধার্য করেছিল। অন্যদিকে চিকিৎসায় গাফিলতির কারণে আরও দুটি বেসরকারি হাসপাতালকে জরিমানা করা হয়েছিল।