Saturday, July 27, 2024

Jhargram Arrest: টাকার বিনিময়ে স্থানীয়দের দিয়েই পোস্টার সাঁটাচ্ছে মাওবাদীরা! ঝাড়গ্রামে দুজনকে গ্রেফতারের পর এমনই তথ্য এল পুলিশের হাতে

- Advertisement -spot_imgspot_img

নিজস্ব সংবাদদাতা: ভোটের সময় দেওয়াল কিংবা পোস্টার লেখা ও সাঁটানোর জন্য লোক ভাড়া করতে দেখা যায় সাধারণ রাজনৈতিক দলগুলিকে। একই ব্যক্তি এ দলে ও দলে খেপ খাটে টাকার বিনিময়ে। কিন্তু মাওবাদীরাও যে টাকার বিনিময়ে অন্যকে দিয়ে পোস্টার লেখায় এবং সাঁটায় এমন তথ্যও উঠে এল পুলিশের হাতে। যদিও এখনও অবধি এটা দাবি মাত্র। জঙ্গলমহল থেকে গ্রেফতার হওয়া এক ‘লিভ দম্পত্তি’ এমনটাই দাবি করেছে। পুলিশ সেই দাবি খতিয়ে দেখছে।

আরো খবর আপডেট মোবাইলে পেতে ক্লিক করুন এখানে

উল্লেখ্য বেশ কিছুদিন ধরেই ঝাড়গ্রাম জেলার বিভিন্ন অংশে লাল কালি দিয়ে সাদা কাগজে লেখা পোস্টার পড়তে শুরু করেছে। এই লাল কালি আর সাদা কাগজ জঙ্গলমহলে মাওবাদী ব্র্যান্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাওবাদী নামাঙ্কিত পোস্টার গুলি পড়ছিল সব চেয়ে বেশি বিনপুরের কাঁকো এলাকায়। মাওবাদীদের ডাকা বনধকে সমর্থন করার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি পোস্টার গুলিতে তৃনমূলের নেতা, মন্ত্রীদের হুঁশিয়ারি, মৃত্যুদন্ড, সরকারের দুর্নীতি ইত্যাদি কথা উঠে আসছিল। পুলিশের নিজস্ব সূত্র অনুযায়ী এই সব এলাকায় স্থায়ী কোনও মাওবাদী অস্তিত্ব না থাকা স্বত্ত্বেও পোস্টার আসছে কোত্থেকে এই নিয়ে ধন্দে ছিল পুলিশ। এলাকায় আতঙ্ক বাড়ছে। তারই পাশাপাশি বেলপাহাড়ির লবনী থেকে পাওয়া তাজা মাইন, কেন্দ্রের সতর্কতা জারি ইত্যাদি জনজীবনকে কিছুটা হলেও বিচলিত করছে।

এরই মধ্যে তদন্তে নেমে কাঁকো এলাকাতে এক পুরুষ ও মহিলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জানা যায় দু’জনের নাম রাজু সিং ও পূজা সিং। রাজুর নিজস্ব বাড়ি ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইল থানার কুলটিকরি অঞ্চলে। বিবাহিত রাজু সেই স্ত্রীকে ছেড়ে পূজার সঙ্গে পূজার বাড়িতে লিভ-ইন করছে। সেই সূত্রে তাঁরা লিভ দম্পত্তি। পূজার বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া পোস্টার গুলিতে রাজুর হাতের লেখার মিল পাওয়া গেছে। পুলিশকে রাজু জানিয়েছেন, ফোনে কেউ তাঁদের নির্দেশ দিত পোস্টার লেখার জন্য। পোস্টারের  বয়ান, সাঁটানোর জায়গা বলে দেওয়া হত। সেই মত কাজ করে টাকা পেতেন তাঁরা। এই দাবি কতটা যথাযথ তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

জঙ্গল মহলে বহুদিন কাজ করে যাওয়া রাজ্য পুলিশের এক উচ্চ পদস্থ কর্তা জানিয়েছেন, ” এটা অসম্ভব কিছুই নয়, নিজেরা বর্তমানে পা রাখতে পারছেনা এমন জায়গাকে সন্ত্রস্ত করতে মাওবাদীরা এই সব ভাড়াটিয়া ব্যবহার করে। এমনকি এলাকায় খুন করার জন্যও মাওবাদীরা স্থানীয় ব্যক্তিদের ব্যবহার করে থাকে। মদ আর টাকার বিনিময়ে কাউকে দিয়ে এই কাজ করানো হয়, অস্ত্রের যোগান দেয় মাওবাদীরা। কাজ হয়ে যাওয়ার পর সেই অস্ত্র ফেরৎ নিয়ে যায়। প্রান্তিক এলাকায় একাধিক খুন করাতে পারলেই মানুষ ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে যায়, জায়গাটার ওপর নিয়ন্ত্রণ নিতে সুবিধা হয় মাওবাদীদের। এক এলাকায় বারংবার পোস্টার পড়লেও মানুষের মনে একটা প্রভাব পড়ে। এলাকার মানুষ একে অপরকে সন্দেহ করতে শুরু করে। একধরনের সাইকো ফিয়ার কাজ করে যার সুযোগ নেয় মাওবাদীরা।”

এদিকে সোমবারও ঝাড়গ্রামে একাধিক জায়গায় পোস্টার উদ্ধার হয়েছে। পোস্টার পড়েছে ঝাড়গ্রাম শহরের গা ঘেঁসেই সেবায়তন এলাকায়। এই পোস্টারে লেখা হয়েছে, ”সব তৃণমূল নেতাদের নিয়ে খেলা হবে। পুলিশকে জুতোর মালা পরানো হবে।” পরের লেখা ”যদি পারো তো অ্যারেস্ট করো।” অন্য পোস্টারটি পুলিশকে হুঁশিয়ারি দিয়ে পড়েছে বেলপাহাড়ি যাওয়ায় পথে, বিনপুর থানা এলাকার নারায়ণপুরে। পোস্টারে লাল কালিতে পুলিশের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দিয়ে লেখা – জুতোর মালা পরানো হবে।

- Advertisement -
Latest news
Related news