নিজস্ব সংবাদদাতা: ৯মাস আগে প্রেমিকের সঙ্গে ঘর ছেড়ে ছিলেন গৃহবধূ। তারপর গ্রামে ফিরেই আত্মহত্যা করলেন ২ জনেই। প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি আত্মহত্যারই বলে মনে করা হচ্ছে। মনে করা হচ্ছে লোকলজ্জায় নিজেদের এলাকা ছেড়ে পালালেও লকডাউনের কারনে বাইরে তেমন করে কাজ জুটিয়ে উঠতে পারেননি তাঁরা। বাধ্য হয়ে গ্রামে ফিরে আসেন তাঁরা। কিন্তু এখানে সামাজিক শাসনের মুখে পড়তে হবে ভেবেই। আত্মহত্যা করেছেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর থানার বংশীধর পুর গ্রামে ঘটনায় ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য। পুলিশ দেহ দুটি উদ্ধার করেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে মৃত ২জন হলেন ধীরেন ডাঙ্গুয়া ও অঞ্জলি সিং। দুজনেই বংশীধরপুরের বাসিন্দা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায় যে প্রায় ৯ মাস আগে ধীরেন ডাঙ্গুয়া তার স্ত্রী ও তিন ছেলে মেয়েকে ছেড়ে গ্রামেরই এক গৃহবধূ অঞ্জলি সিং কে নিয়ে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যায়।
অঞ্জলি সিংয়েরও স্বামী সহ দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। সেই সময় তাদের খোঁজ করে কোথাও পাওয়া যায়নি। হঠাৎই ৯ মাস পর বৃহস্পতিবার সকালে বংশীধর পুর গ্রামের মাঝে থাকা বড়খাল এলাকায় একটি নিমগাছে ওই দুজনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা। যার ফলে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।
ধীরেনের আইনী স্ত্রী যমুনা বলেন ৯ মাস আগে ঘর ছেড়ে চলে গিয়েছিল আমার স্বামী, আমি ছেলে মেয়েকে নিয়ে দিনমজুর খেটে সংসার চালাচ্ছি। একদিন ও বাড়ি ফিরে আসেনি ।লোকমুখে শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি আমার স্বামী গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছে ।একই কথা বলেন অঞ্জলি সিংয়ের স্বামী অনন্ত সিং, তিনি বলেন ৯ মাস আগে ধীরেন ডাঙ্গুয়ার সাথে ও বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। বহু চেষ্টা করেও ওদের খোঁজ পায়নি। বুধবার সকালে লোকমুখে শুনে গিয়ে দেখি দুইজনেই গলায় ফাঁস লাগিয়ে নিম গাছে ঝুলছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় গোপীবল্লভপুর থানার পুলিশ। ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রেমিক প্রেমিকার ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
অনুমান করা হচ্ছে লকডাউনের বাজারে বাইরে পালিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন দুজনে। গ্রামে থাকলে জবকার্ডে ১০০দিনের কাজের কিছুটা সুযোগ মেলে। রেশনকার্ড থেকে কিছুটা হলেও রেশন পাওয়া যায়। কিন্তু বাইরে খাদান, ক্রেসার, কারখানা বা ঠিকা শ্রমই নির্ভর। করোনা কালে এসবের অবস্থা খুবই খারাপ। সামান্য লোক নিয়োগ করলেও স্থানীয় মানুষেদেরই আগে নিতে হয়। সম্ভবতঃ এসব কারণেই ঠিকঠাক কাজ জোটাতে না পেরেই গ্রামে ফিরে এই পথ বেছে নিয়েছেন তাঁরা। যদিও পুলিশ এনিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই বিষয়টা পরিস্কার হবে বলে পুলিশের মত।