নিজস্ব সংবাদদাতা: প্রচন্ড ডিহাইড্রেশন নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করানো হল খড়গপুরের বিজেপি বিধায়ক এবং টলিউডের অভিনেতা হিরণ চট্টোপাধ্যায়কে। জানা গেছে হঠাৎই অসুস্থ বোধ করায় মঙ্গলবার সকালেই আলিপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয় তাঁকে। হাসপাতাল সূত্রেই খবর মিলেছে যে তাঁর শরীরে জলের মাত্রা কমে যাওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বিজেপি বিধায়ক। উল্লেখ্য রবিবার রাতে খড়গপুর শহর ছাড়ার পর সোমবার সকালে বিধানসভার অধিবেশনে যোগ দিয়েছিলেন অভিনেতা হিরণ। সেখানে তাঁর সাথে দুর্ব্যবহার করে বিধানসভার রক্ষীরা এমনই অভিযোগ এনেছিলেন হিরণ। বিষয়টি নিয়ে উত্তেজিত হয়ে পড়েন খড়গপুর বিধায়ক। মঙ্গলবার হঠাৎই তাঁর অসুস্থ হওয়ার খবর পাওয়া যায়।
উল্লেখ্য, চলতি পুরসভা ভোটে খড়গপুর পুরসভার ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হয়েছেন হিরণ কিন্তু এই জয় আনতে কাল ঘাম ছুটে গেছিল তাঁর। উল্টো দিকে থাকা খড়গপুরের ২২ বছরের প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা প্রাক্তন চেয়ারম্যান জহরলাল পালের বিরুদ্ধে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করতে হয়েছে তাঁকে। ওই সময় প্রায় ১৫ দিন মাটি কামড়ে পড়েছিলেন রবীন্দ্রপল্লী, দীনেশনগর, তালবাগিচা এলাকায়। রাতদিন এক করে ছুটে বেড়িয়েছেন বাড়িতে বাড়িতে। অবশেষে ১০৮ ভোটের ব্যবধানে জয় ছিনিয়ে আনতে সক্ষম হন। তাঁর সহকর্মীরা জানিয়েছেন ওই গড়ে প্রতিদিন ২৫কিলোমিটার হাঁটতে হয়েছে হিরণকে। এই নির্বাচনী প্রচার চলার সময়েও একবার অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। বমি হয়েছিল তাঁর। শরীরটা তখন থেকেই খারাপ যাচ্ছিল।
যদিও তাতেও রেহাই মেলেনি হিরণের। জয়ের পর তাঁর কর্মীদের ওপর হামলা হচ্ছে এই কারন দেখিয়ে খড়গপুরেই থেকে গেছিলেন তিনি। প্রতিদিন কর্মীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছেন দলীয় কার্যালয়ে। এমনকি কলকাতায় রাজ্য বিজেপি আয়োজিত জয়ী কাউন্সিলরদের সম্বর্ধনা সভাতেও যোগ দেন ওই একই কারণে। নির্বাচনের পর বিরোধী দলের পাশাপাশি সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছেন নিজের দলের ‘গদ্দার’দের সঙ্গে। এই ভাবে শরীর খারাপের পাশাপাশি মানসিক চাপেও ছিলেন হিরণ। সেই পরিস্থিতির মধ্যেই সোমবার বিধানসভার অধিবেশনে যোগ দিতে যান হিরণ।
সোমবার রাজ্যের বাজেট অধিবেশনে তাঁকে নিয়ে ছোটখাট অশান্তি বাধে। বিজেপি বিধায়কেরা যখন বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন, তখন বিধানসভা থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন হিরণ। তারপর তাঁকে আর ঢুকতে দেওয়া হয়নি বিধানসভার কক্ষে। বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন বিজেপি-র বিধায়ক। যদিও মঙ্গলবারের অসুস্থতার সঙ্গে তাঁর এই মানসিক অশান্তির কোনও সম্পর্ক রয়েছে কি না, জানা জায়নি। যদিও শাসকদলের পক্ষ থেকে তাঁকে বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটেনি বলেই জানানো হয়েছিল। হিরণ অসুস্থ হয়েছেন খবর পেয়েই খড়গপুরে তাঁর সহকর্মীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে।