Saturday, July 27, 2024

Hooch death: কালীপুজোতে দফায় দফায় চোলাই খেয়ে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু সবংয়ের যুবকের! ক্ষোভ এলাকার মানুষের

- Advertisement -spot_imgspot_img

শশাঙ্ক প্রধান : ৫০টাকা ফেললেই চোলাই মদের পাউচ! ৩০০ মিলি লিটারেরপাউচ মেলে পান দোকানে, এমন কি ছোটখাটো মুদি দোকানেও। সেই পাউচেই এখন মাতাল বাংলার গ্রামের পর গ্রাম। তেমনই এক গ্রামে কালীপুজোর রাতে ভরপেট চোলাই গিলে গুরুতর অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হল মাত্র ২৩বছরের এক যুবকের। পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং থানা এলাকার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। সবং থানার দশগ্রাম অঞ্চলের খাজুরি এলাকার দীঘিপাড়া এলাকার ঘটনায় শোকের পাশাপাশি ক্ষোভেও ফেটে পড়েছেন নিহত যুবকের পরিবার ও স্থানীয় মানুষজনেরা। তাঁদের বক্তব্য দেদার বিক্রি হওয়া এই চোলাই কেড়ে নিচ্ছে গ্রামের পর গ্রামের শান্তি কিন্তু উদাসীন প্রশাসন।

আরো খবর আপডেট মোবাইলে পেতে ক্লিক করুন এখানে

পুলিশ জানিয়েছে, সবং থানার খাজুরি গ্রামের মৃত ওই যুবকের নাম মধুসূদন মল্লিক। দুই সন্তানের পিতা দিনমজুর মধুসূদন গ্রামের আরও অনেকের মতই নেশাখোর। দিনান্তের রোজগারের একটা বড় অংশই উড়ে যায় নেশার পেছনে। বৃহস্পতিবারও দিনমজুরের কাজ সেরে বাড়ি ফেরে মধু। ফেরার পথে চোলাই মদ খায়। এদিকে বাড়িতে ফেরার পর টাকা পয়সা না দেওয়ায় ঝগড়াঝাটি শুরু হয় পরিবারের সদস্যদের সাথে। তাঁর স্ত্রী বাড়িতে ছিলনা। পাশের গ্রাম বাপের বাড়ি গিয়েছিল কালীপূজো উপলক্ষ্যে। বাড়িতে অশান্তি হওয়ায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় মধুসূদন। পরিবারের লোকেরা জানিয়েছে মদ খেয়ে পুরো টাকাই উড়িয়ে দিয়েছিল মধুসূদন। শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার সময় বাসনপত্র এবং নিজের সাইকেলটি নিয়ে যায়। পথে তাই বেচে ফের মদ খায় সে।

মাঝরাতে আকাট মাতাল হয়েই পৌঁছায় শ্বশুরবাড়ি। স্বামীর এই অবস্থা দেখে তাকে তিরস্কার করে স্ত্রী। এবার স্ত্রীর সাথে অশান্তি শুরু হয়। এই ঝগড়ার মাঝেই অসুস্থ হয়ে পড়ে মধুসূদন। তীব্র শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন দমবন্ধ হয়ে ক্রমশ নীল হয়ে যাচ্ছিল মধুসূদনের দেহ। খবর পেয়েই পরিবারের সদস্যরা তাকে নিয়ে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় কিন্তু পথেই মৃত্যু হয় তার। মধুসূদনের মা জবা মল্লিক বলেন, “গতকাল মদ খেয়ে বাড়িতে ঝামেলা করার পর ছেলে শ্বশুরবাড়িতে চলে যায়। তারপর সেখানেও প্রচুর পরিমাণে মদ্যপান করে তারপরই অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয়।”

ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন স্থানীয়রা। তাঁদের অভিযোগ, দশগ্রাম অঞ্চলের খাজুরি বুথ, হরেকৃষ্ণ বুথ এলাকায় কিছু অসাধু ব্যক্তি বহুদিন যাবৎ চোলাই মদের কারবার চালাচ্ছে। এলাকায় গোপনে যেমন মদ কাটানো হয় তেমনই টিউবে করে মদ আসে । এমনকি চোলাই মদের হোম ডেলিভারির ব্যবস্থাও চলছে গোপনে। এর ফলে গ্রামের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। কম বয়সি ছেলেরা নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। এই মদের জেরে বাড়ছে দাম্পত্যকলহও। একের পর এক সংসার ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে এই চোলাইয়ের নেশায়।তাঁদের আরও অভিযোগ সমস্তটাই জানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে আবগারি, পুলিশ প্রশাসন। বহুবার জনপ্রতিনিধিদের দ্বারস্থ হয়েছে জনতা চোলাইয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা আবগারি দপ্তরের  এক আধিকারিক জানান, ‘সবং এলাকায় প্রায়ই তল্লাশি চালানো হয় এবং প্রতিবারই প্রচুর চোলাই ও চোলাই তৈরির সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত করা হয়। কিন্তু চোলাই এত নিবিড় ভাবে বিভিন্ন এলাকায় প্রবেশ করেছে যে সব সময় তার তল্লাশ করা সম্ভব হচ্ছেনা। শুধু সবং নয় আশেপাশের থানা এলাকার গ্রামগুলিতেও একই অবস্থা কিন্তু অত কর্মী আমাদের নেই। আমরা একজায়গায় ঘাঁটি ভেঙে দিয়ে এলে পরের দিনই অন্য জায়গায় গড়ে ওঠে। এলাকার মানুষ যদি না রুখে দাঁড়ান তবে চোলাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযান মুশকিল হয়ে পড়বে। আর চোলাই শেষ করে দেবে এলাকার পর এলাকা।”

- Advertisement -
Latest news
Related news