![](http://kgpbangla.in/wp-content/uploads/2022/10/IMG_20221015_215730.jpg)
নিজস্ব সংবাদদাতা: গত ১৪ই অক্টোবর আইআইটি খড়গপুরে (IIT Kharagpur) আসামের তৃতীয় বর্ষের বিটেক ছাত্র ফয়জান আহমেদের মৃত্যুর পর থেকে ক্যাম্পাসে তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে ওঠা ছাত্র অসন্তোষে রীতিমত নাজেহাল হতে হচ্ছে আইআইটি খড়গপুর কর্তৃপক্ষকে। পরিস্থিতি এতটাই সংকটজনক হয়ে উঠেছে যে সম্প্রতি কর্তৃপক্ষকে ইনস্টিটিউট পরিচালনার জন্য সাহায্যের আবেদন জানিয়ে ইমেল পাঠিয়েছেন আইআইটি খড়পুরের ডেপুটি ডিরেক্টর (Deputy director IIT Kharagpur) আধ্যাপক অমিত পাত্র। অধ্যাপক পাত্র ওই ইমেলে স্বীকার করে নিয়েছেন যে ফয়জান আহমেদের মৃত্যু আইআইটি কর্তৃপক্ষের সেই অভাবকে প্রকট করেছে যে অভাবের কারনে দু’দিন ধরে জানতেই পারেননি যে ফায়জান দুদিন আগেই মারা গিয়েছে।
উল্লেখ্য ওই দিন ফায়জানের পচন ধরা মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছিল একটি ছাত্রাবাসের ঘর থেকে। ঘরের মেঝেতে মুখ থুবড়ে পড়েছিলেন ২৪ বছরের ওই ছাত্র। দরজা ভেজানো ছিল। উল্লেখ্য অভিযোগ উঠেছিল ফয়জানের দেহ যে ছাত্রাবাসের রুমে পাওয়া যায় সেই ছাত্রাবাসে ক’দিন আগেই এসেছিলেন তিনি। ফয়জানের পরিবার অভিযোগ করেন যে তিনি আগে যে ছাত্রাবাসে থাকতেন সেই ছাত্রাবাস ছেড়ে এই ছাত্রাবাসে আসার বিষয়টি কর্তৃপক্ষ জানতই না!
![](http://kgpbangla.in/wp-content/uploads/2022/10/IMG-20221015-WA0018.jpg)
দ্বিতীয় যে বিষয়টি আরও অবাক করার মত তা’হল, মৃত্যুর অন্তত দু’দিন আগে থেকে ওই পড়ুয়া দিনে কিংবা রাতে খাবার টেবিলে অনুপস্থিত থাকা সত্ত্বেও কেন সে অনুপস্থিত এই বিষয়টি ছাত্রাবাস পরিচালন কমিটি (Hall Management committee) বা আইআইটি কর্তৃপক্ষ জানার চেষ্টাই করেনি।
খুব স্বাভাবিকভাবেই মৃতদেহ নিতে এসে ফায়জানের বাবা মা এই প্রশ্ন তুলে দিয়ে গেছিলেন যে, আইআইটির মত একটি বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠান যেখানে ভালো অঙ্কের টাকা খরচ করে অভিভাবকরা তাঁদের সন্তানদের পাঠান সেখানে পড়ুয়াদের ভবিষৎ কী? ফায়জানের এই মৃত্যুর ঘটনা বিচলিত করে তোলে তার সতীর্থদের। ব্যাপক ক্ষোভ তৈরী হয় পড়ুয়াদের মধ্যে। ক্যাম্পাসের মধ্যে পড়ুয়াদের প্রতিবাদের পাশাপাশি আইআইটি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ধিক্কার ধ্বনীও ওঠে। পরিস্থিতি এতটাই উত্তেজক হয়ে পড়ে যে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে খোলাখুলি আলোচনায় বসতে বাধ্য হন আইআইটি খড়গপুরের ডিরেক্টর অধ্যাপক বীরেন্দ্র কুমার তেওয়ারী (Director IIT Kharagpur)।
প্রায় ১০ঘন্টা ধরে চলা সেই ‘ওপেন-হাউস সেশন’ – শেষ করার পরই পড়ুয়াদের প্রশ্নবাণে জর্জরিত অধ্যাপক তেওয়ারী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে ক্যাম্পাসের হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। বর্তমানেঅবশ্য তিনি সুস্থ আছেন। এদিকে ঘটনার দায় স্বীকার করে রাজেন্দ্র প্রতাপ এবং লালা লাজপত রায় হলের ওয়ার্ডেন দুই আধ্যাপকও পদত্যাগ করেছেন। উল্লেখ্য ফায়জান রাজেন্দ্র প্রতাপ ছাত্রাবাস থেকে লালা লাজপত রায় ছাত্রাবাসে গিয়েছিলেন দেড় মাস আগে যা ওই দুই ওয়ার্ডেন জানতেননা বলেই অভিযোগ।
এই ঘটনার পরই আইআইটির পড়ুয়া বিষয়ক দায়িত্ব প্রাপ্তবিভাগীয় ডিন অধ্যাপক ধ্রুবজ্যোতি সেন অব্যাহতি চেয়েছেন বলে জানা গেছে সেই জায়গায় অধ্যাপক শ্বাশত চক্রবর্তীকে আনা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
ডেপুটি ডিরেক্টর তাঁর ই মেল আবেদন মারফৎ পড়ুয়াদের জানিয়েছেন, এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে তার জন্য আমাদের সবারই আত্মানুসন্ধান করা প্রয়োজন। আমরা তা করছিও। একটি সমন্বয় ব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে। একটু সময় লাগবে। এই পরিসরে সবার কাছে সহযোগিতা কামনা করছি।