![](http://kgpbangla.in/wp-content/uploads/2022/07/Screenshot_20220703-011351_Video-Player.jpg)
নিজস্ব সংবাদদাতা : বাবা ভীষন হালকা হয়, বিশ্বাস করুন। পালকের মত হালকা। বাবাকে মারুন ধরুন, গালাগালি করুন, বাবা কিছুই বলতে পারেনা। বাবারা কী ভীষন বোকাও হয়? কী জানি হলদিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটা ভিডিও সেরকমই মনে করিয়ে দিচ্ছে। যে বাবা একদিন হাত ধরে স্কুলে নিয়ে গিয়েছিল নিজের সংসার হওয়ার পর সেই বাবাকে কত অবলীলায় ছুঁড়ে ফেলা যায়! সাঁতার শেখানো, সাইকেল শেখানো থেকে জীবনের কঠিন অংক শেখানো? বাবাই, তাইনা। কিন্তু সেই বাবাকেই বড় হওয়া ছেলে বলে, ” আমি আমার ছেলের জন্য যা করছি তুই করেছু (করেছিস) ? কী করেছু তুই ছেলের জন্য?নিজের ছেলের হয়ে যে প্রশ্ন করছে সে একজন বাবা। আবার যাকে প্রশ্ন করতে করতে দুহাতের বাহুদিয়ে ঘাড়ে প্যাঁচ দিয়ে খাট থেকে নিচে ফেলে দিচ্ছে সেই বৃদ্ধও একজন বাবা। সেই বাবা যে একদিন এই ছেলেকে বড় করেছে একদিন ছেলে তাঁকে মেঝেতে ঘষটাতে ঘষটাতে বাড়ির নিয়ে গিয়ে ফেলবে বলে?
তুই তোকারি আর কুৎসিত গালাগালি! এই ক’দিন আগেই কী বাহারি শোভায় বাবার সঙ্গে সেলফি দিয়েছে পিতৃদিবস! শনিবার এমনি এক ঘটনার ভিডিওদৃশ্য সামনে এসেছে ফেসবুকের সৌজন্যে। ছি-ছিৎকার পড়ে গিয়েছে হলদিয়া পুরসভার ১১ নং ওয়ার্ডে দুর্গাচক থানার হলদিয়া হাইস্কুল এলাকায়।জানা গেছে, ওই এলাকার বাসিন্দা মন্টু মিস্ত্রিকে মাটিতে ফেলে মারধর করছে হতভাগ্যেরই গুণধর এক ছেলে। ছেলের নাম সঞ্জয় মিস্ত্রি। ঘটনা দেখে হতচকিত মানুষ। ঝড় উঠেছে নিন্দার। অভিযুক্ত ছেলের শাস্তির দাবীতেই মুখর সকলে। ঘটনাটি শুক্রবার সন্ধের বলে জানা গেছে।
![](http://kgpbangla.in/wp-content/uploads/2022/07/Screenshot_20220703-011426_Video-Player.jpg)
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে এক ঘর লোকের মধ্যেই ঘটনাটি ঘটছে। সত্তরোর্দ্ধ বৃদ্ধ বসে রয়েছেন খাটে। রোগাটে গড়ন, খালি গা। ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি দেখা যাচ্ছে সঞ্জয় হঠাৎই তেড়ে যাচ্ছে বাবার দিকে। বাবাকে বলছে , আমি আমার ছেলের জন্য যা করছি তুই করেছু, কী করেছু তুই ছেলের জন্য? আমার ছেলেকে খাওয়ানোর জন্য তুই কিছু দিছু (দিয়েছিস)? আমার ছেলেকে খাওয়ানোর জন্য তুই কী দিছু বল্?” এরপরই বাবাকে প্যাঁচ মেরে খাট থেকে মেঝেতে ফেলে দিচ্ছে ছেলে আর টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছে ঘরের বাইরে। উপস্থিত জনেরা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছেন পুত্রবধূও কিন্তু সঞ্জয় কারও কথা শুনতে নারাজ।
এক সময় অবশ্য রুখে দাঁড়াচ্ছেন আরেকজন। সম্ভবতঃ বৃদ্ধের অন্য ছেলে। হয়ত সংসারে তাঁর টাকার জোর কম বলেই দাদার কাছে একটু হেয় হয়ে থাকতে হয় তাঁকে। শেষ অবধি রুখে দাঁড়ায় সেই ছেলে। বাবাকে ছেড়ে এবার তাকে মারতে যায় সঞ্জয়। এখানেই ভিডিও শেষ। মাত্র ৪৫ সেকেন্ডের ভিডিও উলঙ্গ করে দেয় হতভাগ্য বাবার সারা জীবনের অবদানকে। হায় বাবা! হায় পিতৃদিবস! স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে সঞ্জয় হলদিয়ার একটি বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। না, এতটা লেখার দরকার ছিলনা। লেখা হল যদি এই খবর পড়ার পর কোনও হতভাগ্য বাবার ছেলে নতুন করে বাবাকে ভালোবাসতে শিখতে পারে।