![](http://kgpbangla.in/wp-content/uploads/2021/09/20210912_201825.jpg)
নিজস্ব সংবাদদাতা: আরও একবার বিতর্ক তৈরি হয়ে গেল ‘মা’ উড়লাপুল বা ফ্লাইওভার নিয়ে। কলকাতা তথা বাংলার গর্বের এই উড়ালপুল নিয়ে সেই বিতর্ক তৈরি করে দিয়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকারের একটি বিজ্ঞাপন। যে বিজ্ঞাপনে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের উন্নয়ন মহিমা বোঝাতে গিয়ে ঢাউস বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করা হয়েছে ৯.৬২ কিলোমিটার এই উড়ালপুলের ছবি।
এই উড়ালপুল সংযুক্ত করেছে একদিকে কলকাতার ইএম বাইপাস ও পার্ক সার্কাসের সেভেনপয়েন্ট ক্রসিংকে (মূল সেতুটি ৪.৫ কিমি)। এছাড়া এজেসি বোস উড়ালপুলের সংযুক্ত হওয়ায়। আরও পরবর্তীকালে দুটি অতিরিক্ত ডানা যুক্ত করায় এখন কোনও সিগন্যাল ও ট্রাফিক পয়েন্ট ছাড়াই এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে পৌঁছে যাওয়া যায় ইএম বাইপাশে বা বিপরীতে আসা যায়।
![](http://kgpbangla.in/wp-content/uploads/2021/09/IMG-20210912-WA0010.jpg)
সামনেই উত্তরপ্রদেশের নির্বাচন। তাই যোগী আদিত্যনাথের আমলে উত্তরপ্রদেশের কতটা উন্নয়ন হয়েছে বোঝানোর জন্য বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে। এমনই একটি বিজ্ঞাপনে মা উড়ালপুলের ছবি বের হওয়ার হৈচৈ পড়ে যায়। একে তৃনমূলের আমলের ট্রেডমার্ক নীল-সাদা রঙ, তার ওপর কলকাতায় চলা হলুদ ট্যাক্সি সহজেই নজর কেড়ে নেয় অনেকেরই। তীব্র গুঞ্জন শুরু হয়। তৃনমূলের তরফে তীব্র নিন্দা করা হয়। স্বয়ং অভিষেক ব্যানার্জী তীব্র কটাক্ষ করেন এই ধরনের ঘটনায়।
উত্তরপ্রদেশ সরকারের পক্ষে বলা হয়, এটা সম্পূর্ণ বিজ্ঞাপন দাতাদের ভুল। এখানে সরকারের কোনও ভূমিকা নেই। যদিও সাধারণভাবে এটাই দস্তুর যে সরকার তার বিজ্ঞাপনের যে খসড়া, ছবি ইত্যাদি বিজ্ঞাপন দাতাদের দিয়ে থাকে সেটাই প্রকাশ করে তারা। এদিকে বিজ্ঞাপনদাতা সংস্থাও ঘোষণা করে যে এটা তাদেরই ভুল। এবং যে সমস্ত অনলাইন স্তরে এই বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়েছিল তা তুলে নেওয়া হয়েছে। তৃনমূলের তরফে ফের কটাক্ষ করে বলা হচ্ছে যে, নিজের চুরি ধরা পড়ে যাওয়ায় তা এখন বিজ্ঞাপন দাতাদের ঘাড়ে চাপিয়ে সাধু সাজছে যোগী সরকার।
এই বিতর্কে নতুন করে জড়িয়েছে তৃনমূল পরিচালিত রাজ্য সরকারেরও নাম পরিবর্তন প্রসঙ্গ। ২০০৩ সালে রাজ্যের পরিবহন দপ্তর দেশের চতুর্থ দীর্ঘতম এই উড়ালপুলের আসল পরিকল্পনা রচনা করে বামফ্রন্ট সরকারের আমলে। তখন এই উড়ালপুলের নামকরন করা হয়েছিল ‘পরমা আইল্যান্ড ফ্লাইওভার।’ না, শুধু পরিকল্পনা নয়, কাজও শুরু হয়ে যায় ২০১০ সালে। তখন টার্গেট ছিল ২০১২ সালের আগষ্ট মাসে এই কাজ শেষ হবে। সেইমত অর্থও বরাদ্দ হয়। কাজ শুরু করে হিন্দুস্তান কনস্ট্রাকশন কোম্পানি। আর কিছু অংশের কাজ করে লার্সেন এন্ড টুব্রো।
২০১১ সালে সরকারের পট পরিবর্তন। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর জায়গায় মুখ্যমন্ত্রী পদে আসীন হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১২ তে কাজ শেষ হয়নি। ২০১৫ সালের ৯ই অক্টোবর যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর উদ্বোধন করেন তখন এই সেতুর নাম বদলে হয়ে যায় ‘মা!’ ৩২০ কোটি টাকার প্ৰকল্পিত সেতুটির ব্যয় দাঁড়ায় শেষ অবধি ৪৬০ কোটি টাকায়। নাম বদল থেকে বিজ্ঞাপন বদল নিয়েই এখন জমজমাট সোশ্যাল মিডিয়া। অনেকেই মজা করে বলছেন, পরমা থেকে মা হয়ে এখন বাবা হয়ে গেল দেশের বৃহত্তম উড়ালপুলটি। ভবানীপুর উপনির্বাচনেও এই নিয়ে চলছে বাম তৃনমূল বিজেপি তরজা।