শশাঙ্ক প্রধান: খোদ ডেবরা সদরের ওপর সিপিএমের দখলে থাকা গ্রামপঞ্চায়েতের দখল নিল তৃনমূল।পশ্চিম মেদিনীপুুুর জেলার ডেবরা পঞ্চায়েত সমিতির অন্তর্গত এই একটিমাত্র গ্রাম পঞ্চায়েত যা সিপিএমের দখলে ছিল তা গত ১৩ই জুলাই তৃনমূলের আনা অনাস্থা প্রস্তাব পাশ হয়ে যাওয়ায় ক্ষমতাচ্যূত হয় সিপিএম। পদত্যাগ করতে হয় প্রধান মলি চন্দ,উপপ্রধান অশোক পাত্রকে। সোমবার সেই পদে নির্বাচিত হলেন সোমা তেলি দোলাই ও পুতুলরানী সিং। উল্লেখ্য উপপ্রধান পদে নব নির্বাচিতা পুতুল রানী সিং ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপির হয়ে জয়ী হয়েছিলেন।
২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ১৫সদস্য বিশিষ্ট ডেবরা পঞ্চায়েত সমিতির এই ৫/১ গ্রামপঞ্চায়েতটিতে ৬জন সিপিএম ও ৬জন তৃনমূল সমর্থিত গ্রামপঞ্চায়েত সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। অন্যদিকে বিজেপির ৩জন সদস্য নির্বাচিত হন। গ্রাম পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনের সময় প্রধান ও উপপ্রধান পদে সিপিএম ও তৃনমূল সদস্যরা পরস্পর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে বিজেপির তিন নির্বাচিত সদস্য প্রধান ও উপপ্রধান পদে এটাই সিপিএম প্রার্থীদের সমর্থন করলে সিপিএমের বোর্ড গঠন হয়। সম্প্রতি বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল জয়ের পরে পরেই বিজেপির ওই তিন নির্বাচিত সদস্য সিপিএম বোর্ডের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করার পাশাপাশি তৃনমূলে যোগদান করলে সাবেক বোর্ডের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা হয়। যে অনাস্থায় পরাজিত হয় সিপিএম।
এদিকে যে বাজারে তৃনমূলের এক তরফা পঞ্চায়েত আসনে জয় সেই বাজারে এই পরাজয় ডেবরা তৃনমূলের কাছে লজ্জার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনের দেড় বছর আগে সেই কলঙ্ক মোচন করে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল ডেবরা তৃনমূল। সোমবার নবনির্বাচিত প্রধান ও উপপ্রধানদের নিয়ে ডেবরা বাজার এলাকায় একটি মিছিল করে তৃনমূল। ডেবরা তৃনমূলের অন্যতম নেতা তথা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃনমূলের সাধারণ সম্পাদক সীতেশ ধাড়া জানিয়েছেন, “দেরিতে হলেও কয়েকজন সদস্য সদস্যা উপলব্ধি করেছেন যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনমুখী পরিকল্পনাগুলি বাস্তবায়ন করতে হলে তৃনমূলের নীতিতেই করা সম্ভব। আর সে কারণেই তাঁরা তৃনমূলে যোগ দিয়েছেন। নতুন বোর্ড দায়িত্ব নিয়ে সমস্ত বকেয়া কাজ দ্রুত শেষ করার পাশাপাশি নতুন পরিকল্পনাও গ্রহণ করবে। বিধানসভা নির্বাচনের পরে পরেই এই জয় ডেবরাবাসীর উন্নয়নের জন্যই উৎসর্গ করলাম আমরা।”
অন্যদিকে ডেবরা সিপিএমের পক্ষে এক স্থানীয় নেতা জানিয়েছেন, “প্রায় সাড়ে তিনবছর স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত পঞ্চায়েত পরিচালনা করেছে আমাদের দল। ডেবরার যেকোনও গ্রামপঞ্চায়েতের চাইতে অনেকবেশি স্বচ্ছ পঞ্চায়েত চালিয়েছি আমরা। বর্তমান বোর্ড যাতে জনগনের স্বার্থে কাজ করে সেই দিকে নজর থাকবে আমাদের পঞ্চায়েত সদস্য সদস্যাদের। নতুন বোর্ডে গিয়েই যাঁরা পদ পেয়েছেন তাঁরা কী উদ্দেশ্যে ওই পদে গিয়েছেন তা ডেবরাবাসীর কাছে পরিস্কার।