নিজস্ব সংবাদদাতা : আগামী শনিবার (৪ঠা ডিসেম্বর) থেকে সোমবার (৫ই ডিসেম্বর) দিঘার সমুদ্রে পর্যটকদের স্নান করার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করল পূর্ব মেদিনীপুর প্রশাসন। শনিবার ও রবিবার বড়সড় দুর্যোগের মুখে পড়তে চলেছে দিঘার সমুদ্র উপকূলীয় এলাকা। এমনই আশঙ্কায় বৃহস্পতিবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্ৰশাসনের একটি বৈঠক হয়েছে। জেলাজুড়ে জারি করা হয়েছে দুর্যোগ সতর্কতা। চলছে মাইকিং। দুর্যোগ বার্তা পেয়ে সমুদ্র থেকে ফিরে আসছেন মৎস্যজীবীরা।
আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে, আন্দামান সাগর এবং সংলগ্ন অঞ্চলে তৈরি হয়েছিল একটি নিম্নচাপ বলয়। গত ২৪ ঘণ্টায় শক্তি বাড়িয়ে তা সুস্পষ্ট নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে তা দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। হাওয়া অফিসের তরফে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতের মধ্যেই সেটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। শুক্রবার আরও শক্তি বাড়িয়ে তা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। এবং উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে যাবে। যে কারণেই দ্রুত ডাঙায় ফিরতে বলা হয়েছিল মৎসজীবীদের।
আলিপুর আবহাওয়া অফিস আরও জানিয়েছে, শনিবার ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে পূর্ব মেদিনীপুরে। তাছাড়া পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, দুই পরগনা এবং হাওড়াতেও হতে পারে ভারী বৃষ্টি। সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা বেগে বইবে হাওয়া। তারই সাথে সমুদ্র উত্তাল থাকার সম্ভাবনা থাকায় আগামী শনিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত সমুদ্রস্নানেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ঝড়বৃষ্টির কারণে কৃষিক্ষেত্রেও বড়সড় ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। মাঠে পড়ে রয়েছে নানা ফসল। বৃষ্টি নামার আগে ওই ফসল নিয়ে কৃষকমহলে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যেই কৃষিদপ্তরের পক্ষ থেকে ফসল তুলে নেওয়ার জন্য কৃষকদের কাছে আবেদন করা শুরু হয়েছে।
পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, ‘ দুর্যোগ মোকাবিলায় সবধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে অধিকাংশ লঞ্চ-ট্রলার সমুদ্র থেকে ফিরে এসেছে। কৃষদকের সতর্ক করা হয়েছে। আগামী শনিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত সমুদ্রে স্নানে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সাইক্লোন সেন্টারগুলিকে তৈরি রাখা হচ্ছে।’ হাওয়া অফিস জানিয়েছে, দক্ষিণ থাইল্যান্ড উপকূলে তৈরি হওয়া নিম্নচাপ ঘনীভূত হয়ে আন্দামান সাগর হয়ে বঙ্গোপসাগরের দিকে আসছে। দফায় দফায় শক্তি বাড়িয়ে ২ ডিসেম্বরের পর তা ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদে হিসেবে অবস্থান করবে বঙ্গোপসাগরের ওপর। আছড়ে পড়বে ৪-৫ ডিসেম্বর নাগাদ।
এখনও অবধি ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের সম্ভাব্য অভিমুখ ওড়িশা-অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূল। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস, এর জেরে ঝড়বৃষ্টি হবে পূর্ব মেদিনীপুর সহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়। ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে উপকূলে। তবে জাওয়াদের অভিমুখ বদলেও যেতে পারে আর তাহলে ফের নতুন করে ভাবতে হতে পারে।