নিজস্ব সংবাদদাতা: থাইল্যান্ডে তৈরি হওয়া জাওয়াদ ইতিমধ্যেই মায়ানমার সাগর পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। দিল্লীর মৌসম ভবন জানিয়েছে কিছুক্ষণ পরেই এই ঝড়ের ল্যান্ডফলের সময়, স্থান এবং ল্যান্ডফলের সময়ে এর গতিবেগ সম্পর্কে ধারণা করা যাবে। দক্ষিণবঙ্গের উপকূল ও বিস্তৃত বঙ্গে এই ঝড়ের ব্যাপক প্রভাব লক্ষ্য করা যাবে বলেই আশঙ্কা করছে কৃষিদপ্তর। এই পরিপ্রেক্ষিতে কৃষকদের জন্য কিছু নির্দেশিকা জারি করল কৃষিদপ্তর।
১। মাঠের পাকা ধান কেটে ঝেড়ে গুদামজাত করুন, প্রয়োজনে যন্ত্রের সাহায্য নিন।
২। সবজি, তৈলবীজ বিশেষ করে সর্ষে বা সদ্য লাগানো আলুর জমিতে জমা জল নিষ্কাশনের দ্রুত ব্যবস্থা নিন। প্রয়োজনে দুর্যোগ পরবর্তীতে ছত্রাকজাতীয় রোগের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে কীটনাশক প্রয়োগ করুন।
৩। যে সমস্ত কৃষক ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আলু লাগানোর পরিকল্পনা করেছিলেন তাঁরা অন্ততঃ আলু লাগানোর কাজ একসপ্তাহ পিছিয়ে দিন।
৪। সবজি বা ফল বিশেষ করে কলা জাতীয় গাছ যেগুলো ঝড়ে ভেঙে পড়তে পারে সেগুলোকে যত্ন করে রাখুন, বাঁশ, কঞ্চি ইত্যাদির সাথে বেঁধে ফেলুন। যাতে না পড়ে যায়।
৫। সবজির মাচা, পানের বরোজ ইত্যাদি শক্ত করে বেঁধে রাখুন যাতে প্রতিকূল আবহাওয়া থেকে রক্ষা করা যায়।
৬। কৃষকদের আরও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে যে, আবহাওয়া সংক্রান্ত পরবর্তী বুলেটিনের দিকে নজর রাখুন ও সেই মত ফসলের ক্ষেতের ব্যবস্থা নিন।
উল্লেখ্য ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর (IMD) জানিয়েছে অন্ধ্র এবং ওড়িশা উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ। বৃহস্পতিবার বিকেলের মধ্যে শক্তি বাড়িয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জাওয়াদের প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে। সপ্তাহের শেষে কলকাতা সহ উপকূলের জেলাগুলিতে ঝোড়ো হাওয়া সহ অতি ভারি বৃষ্টি হতে পারে।
শুক্রবার সকাল থেকে দক্ষিনবঙ্গের আবহাওয়ার একটি তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাবে। বাতাসের শুষ্কভাব বৃহস্পতিবার বিকেলের পর থেকে সরে যাবে এবং শুক্রবার থেকে রবিবার পর্যন্ত এই দুর্যোগ চলবে বলে জানা যাচ্ছে। এর মধ্যে রবিবার, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে সবথেকে বেশি দুর্যোগের আশঙ্কা করা হচ্ছে। পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, কলকাতা, ঝাড়গ্রাম এবং হাওড়ায় থেকে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সর্তকতা রয়েছে। রবিবার ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে কলকাতা, ঝাড়গ্রাম, হাওড়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরে। হুগলি, নদীয়া, মুর্শিদাবাদ, পূর্ব বর্ধমান এবং উত্তরবঙ্গের মালদা জেলাতেও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।
উল্লেখ্য গত কয়েকটি ঘূর্ণিঝড় ও অকাল বর্ষণে বারংবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দক্ষিনবঙ্গের ফসল। আর নতুন করে যেন ফসল নষ্ট না হয় তার জন্যই কৃষি দপ্তরের এই পরামর্শ বলে জানা গেছে।