নিজস্ব সংবাদদাতা: কাঁকড়া আর চিংড়ি খাওয়া বারণ বলে তাঁর জন্য নেওয়া হয়েছিল অন্য পদ কিন্তু একেই কী কাল বলে? খাবনা খাবনা করেও কাঁকড়া খেয়েই ফেললেন যুবক আর তাতেই ঘটে গেল চরমতম বিপত্তি। চিকিৎসার কোনও সুযোগ না দিয়ে হোটেলেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন ২২ বছরের এক যুবক। মার্কেটিংয়ে গ্র্যাজুয়েট হওয়ার পর লকডাউনের ধকল কাটিয়ে সবে মাত্র একটা কনসালটেন্সি ফার্মে চাকরি পেয়েছিলেন ওই যুবক। আর সেই আনন্দে পরিবারের সব্বাইকে নিয়ে এসেছিল দিঘা বেড়াতে কিন্তু সেটাই তাঁর শেষ বেড়ানো হয়ে গেল।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে মৃত যুবকের নাম সৌম্যদীপ সরকার। মা, মাসি, মামা এবং কয়েকজনের সঙ্গে শুক্রবার বেহালা থেকে দিঘা এসে পৌঁছেছিল। ওল্ড দিঘার একটি হোটেলে ছিল তাঁরা। শনিবার বেলা ১০টা থেকে প্রায় ১২টা অবধি সৌম্যদ্বীপ সমুদ্রে স্নান করেছিলেন বেশ মজা করেই। এরপর হোটেলে ফিরে স্নান সেরে নিচের রেস্টুরেন্টে খেতে নামে। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন আ্যজমার ধাত থাকায় তাঁর মেনুতে চিংড়ি বা কাঁকড়া রাখা হয়নি। তবুও পরিবারের বারণ না শুনে কাঁকড়া খেয়ে নেয় সৌম্যদ্বীপ। তারপর নিজের ঘরে চলে যায়। কিছুক্ষনের মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই মৃত্যু হয় তাঁর।
সৌম্যদ্বীপের মাসি সুস্মিতা মজুমদার জানিয়েছেন, ‘ ওর আ্যজমা ছিল তাই চিংড়ি বা কাঁকড়া খাওয়া বারণ ছিল। ও প্রথমে বলেও ছিল যে কাঁকড়া খাবেনা তাই ওর জন্য ডিম ভাজা নেওয়া হয়েছিল। আমরা নিয়েছিলাম কাঁকড়া ভাজা। কাঁকড়া ভাজা আসতেই ও সিদ্ধান্ত বদল করে কাঁকড়া খেতে চায়। আমরা না বলি। ও বলে প্রথমে আমি অল্প একটু খাবো যদি কোনও কিছু না হয় তাহলে পুরোটা খাবো। সেখানেও আমি বলেছিলাম যে, না খাওয়াই ভালো কারন অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া অনেক সময় দেরি করে হয়। কিন্ত ও আস্তে আস্তে পুরো কাঁকড়াটাই খেয়ে ফেলে। এরপর খাওয়া শেষ করেই ও আমাদের সবার আগে রুমে চলে যায়।’
সুস্মিতা আরও বলেন, ‘ আমরা তখনও খাওয়া শেষ করিনি। আমার ভাই হঠাৎই আমাদের ফোন করে ডাকে। বলে, সৌম্যদ্বীপ কেমন করছে। আমরা ছুটে যাই। দেখি বিছানায় পড়ে রয়েছে ও। ওর ঠোঁট ফুলে গিয়েছে। দাঁতে দাঁত লেগে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে। হোটেলের ছেলেরা অনেক চেষ্টা করেছিল। চামচ দিয়ে ওর দাঁতের পাটি ছাড়ানোর চেষ্টা করে ওরা। আমাদের গাড়ি করেই ওকে হাসপাতালে নিয়ে যাই কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ! চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন আর কিছুই করার নেই।