নিজস্ব সংবাদদাতা: লাগাতার কর্মবিরতির পথে হাঁটালেন আইআইটি খড়গপুরের (IIT-Kharagpur) চুক্তিভিত্তিক কর্মীরা। বুধবার আইআইটির প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচীর মধ্যে দিয়েই এই লাগাতার কর্মবিরতি শুরু হল বলে জানিয়েছেন চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের সংগঠন জয়েন্ট এ্যকশন কমিটির নেতৃত্ব। জানা গেছে আইআইটি আ্যকাডেমিক ক্যাম্পাসের ভেতরে ‘আউট সোর্সিং’ এর আওতাধীন সাড়ে ৮০০ চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী এই বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন।
জানা গেছে মোট ১১জন ঠিকাদারের আওতায় এই চুক্তিভিত্তিক কর্মচারীরা কাজ করে থাকেন। সাফাইকর্মী, মালি, ঝাড়ুদার, পিওনের মত গ্রূপ-ডি কর্মচারীর পাশাপাশি বিভিন্ন ল্যাবগুলির সহায়ক, হিসাবরক্ষকের সহায়ক, হার্ডওয়্যার বা সফ্টওয়্যার কারিগরি সহায়কের মত পদে এরা নিযুক্ত রয়েছেন। ফলে এই চুক্তি ভিত্তিক কর্মীদের কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ চলতে থাকলে ভালই অসুবিধার মধ্যে পড়তে হতে পারে আইআইটি কর্তৃপক্ষকে।
জয়েন্ট এ্যকশন কমিটির অন্যতম নেতৃত্ব জহরলাল পাল জানিয়েছেন, আইআইটির সিংহভাগই চালিয়ে নিয়ে যান এই কর্মচারীরা যাঁরা কিনা দিনের পর দিন ধরে অবহেলিত হয়ে রয়েছেন। বহুদিন এঁদের কোনও প্রমোশন নেই, বেতন বৃদ্ধি নেই। উৎসবের সময় যে অর্ধেক বোনাস দেওয়ার কথা হয়েছিল ঠিকাদারদের সঙ্গে সেই বোনাস এখনও অপূর্ণ আছে। এই সব ঠিকাদাররা আইআইটির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ। আইআইটি কর্তৃপক্ষ এঁদের বাধ্য করতে পারে কর্মচারীদের নূন্যতম সুযোগ সুবিধা দেওয়ার জন্য কিন্ত কর্তৃপক্ষ আমাদের কোনও কথাই শুনছেননা বাধ্য হয়ে আমরা লাগাতার কর্মবিরতি শুরু করেছি।
জয়েন্ট এ্যকশন কমিটির অন্য আরেক নেতা আয়ুব আলি জানিয়েছেন, এই আন্দোলনে শুধুমাত্র আইআইটি খড়গপুর (IIT Kharagpur) বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট স্টাফরা করছেন। এর বাইরে রয়েছে বিস্তৃত ক্যাম্পাসে কর্মরত সহস্রাধিক কর্মী যাঁরা ছাত্রাবাস সহ বিভিন্ন জায়গায় কর্মরত। তাঁদেরও কিছু নির্দিষ্ট দাবি দাওয়া রয়েছে। যদি বর্তমান আন্দোলন কারীদের সঙ্গে তাঁরাও যুক্ত হন তবে সমগ্র আইআইটি অচল হয়ে যাবে। আলি বলেন, ‘ আমরা চুক্তি অনুযায়ী আমাদের পাওনা দাবি করছি মাত্র। কোনও অতিরিক্ত দাবি করছিনা। যেমন চুক্তি ছিল কোনোও কর্মীর মৃত্যু হলে তাঁর পরিবারের একজন কাজ পাবেন। কিন্তু বহু কর্মীর মৃত্যু স্বত্ত্বেও তাঁদের পরিবার কাজ পায়নি।’
বিষয়টি নিয়ে আইআইটি কর্তৃপক্ষর কোনও সরকারি প্রতিক্রিয়া মেলেনি তবে এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘ আউট সোর্সিংয়ের আওতায় থাকা কর্মীদের সঙ্গে আমাদের কোনও চুক্তি হয়নি। আমরা ঠিকাদার নিয়োগ করেছি আর ঠিকাদার কর্মীদের নিয়োগ করেছে ফলে এই দাবি আমাদের কাছে রাখা সঙ্গত নয়।’
একজন ঠিকাদার জানিয়েছেন, আইআইটি কর্তৃপক্ষর সঙ্গে চুক্তি মতই আমরা কর্মচারীদের সুযোগ সুবিধা প্রদান করি। সেই চুক্তিতে বোনাস দেওয়ার মত কোনোও নির্দেশিকা আমাদের দেওয়া হয়নি। ২০১৭-১৮ সালে আইআইটি কর্তৃপক্ষ আমাদের কর্মীদের বোনাস দেওয়ার কথা বলে এবং সেই বাবদ অর্থ সংস্থান করে তাই বোনাস দিতে পেরেছি। এরপর আইআইটি আর কোনও অর্থ সংস্থান করেনি। ফলে আমরা বোনাস দেব কীভাবে?