Saturday, July 27, 2024

Revolutionary Medinipur: বার্জ হত্যার ৮৯ বছর, অগ্নি শহিদ অনাথবন্ধু পাঁজা ও মৃগেন্দ্রনাথ দত্ত ।। শিবদেব মিত্র

- Advertisement -spot_imgspot_img

বার্জ হত্যার ৮৯ বছর, অগ্নি শহিদ অনাথবন্ধু পাঁজা ও মৃগেন্দ্রনাথ দত্ত                    শিবদেব মিত্র                                                                                                                      ১৯৩০। মহাত্মা গান্ধীর আহ্বানে লবণ আইন অমান্য ও সত্যাগ্রহ আন্দোলনের জোয়ারে উত্তাল সারা ভারতবর্ষ। বাংলাও সাড়া দিয়েছিল তাতে সমান উদ্দমে। সাড়া দিয়েছিল অখণ্ড মেদিনীপুর জেলার সাথে সদর শহরও। বাংলার তদানীন্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রেনটিস সাহেব রিপোর্ট দিলেন, মেদিনীপুর জুড়ে চলছে চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা! সন্ত্রস্ত ব্রিটিশ সরকার স্থানীয় প্রশাসনকে সঙ্গী করে নারকীয় অত্যাচার চালায়, এই সময়। অভব্য সে অত্যাচারে পীড়িত মেদিনীপুরের কথায় শিউরে উঠেছিল সারা দেশ। পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরু বার্তা দিলেন, ” Among the many places which have provide matyers for the cause of Indian freedom, Midnapore district occupies an honourable position…”; তিনি আরও বললেন- মেদিনীপুরে যা ঘটে গেছে তা স্মৃতি থেকে মুছে যাওয়ার নয়।

আরো খবর আপডেট মোবাইলে পেতে ক্লিক করুন এখানে

অহিংসার পূজারীদের ওপর চলছে ব্যাপক অত্যাচার। গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় বন্দী হচ্ছেন হাজার হাজার সত্যাগ্রহী। এমতাবস্থায় ঘটল এক চমকপ্রদ আত্মবলিদানী সংগ্রামের ঘটনা। ১৯৩০ এর ৮ ডিসেম্বর, মেদিনীপুর শহরে বি ভি র অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সংগঠক দীনেশ গুপ্ত আরও দুই সহবিপ্লবীর সাথে রাইটার্স আক্রমণ করলেন । যা ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে ‘অলিন্দ যুদ্ধ ‘ নামে এক বহু আলোচিত অধ্যায়। অপর দুই সহযোদ্ধা বিনয়কৃষ্ণ বসু, বাদল (সুধীর) গুপ্ত ক্রমান্বয়ে আত্মবলিদান দিলেও, বেঁচে যান দীনেশ। বিচারে দেশবাসীকে স্তম্ভিত করে বিচারপতি গার্লিক মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করেন তাঁর।

দীনেশ গুপ্ত আসামের জলসঙের ছেলে। পড়াশোনা ও তার পাশাপাশি স্বদেশী আন্দোলনের প্রসারের জন্য আসা তাঁর মেদিনীপুরে। মেদিনীপুর কলেজে রসায়নবিদ্যায় স্নাতক স্তরে পড়াশোনা করতেন তিনি। একদিকে সত্যাগ্রহীদের ওপর অমানুষিক অত্যাচার, নিরস্ত্র মানুষের ওপর অস্ত্রের হানা, অহিংসার উত্তরে হিংসার উগ্রতা আর অপরদিকে প্রিয় সাথি দীনেশ গুপ্তের ফাঁসির ফরমান! থামতে পারেনি মেদিনীপুর। রক্তে রক্তে তখন আগুন ধরেছে প্রতিহিংসার। কে যেন প্রচার করেছে সে মৃত্যু নেশার সঙ্গীত- ‘ যদি মৃত্যুর মাঝে নিয়ে যায় পথ, সুখ আছে সেই মরণে…’ । ঘটনার স্রোত এগিয়ে চলল দুরন্ত গতিতে, সঙ্গে চলল সদর্প সংগ্রামী বীর বিপ্লবীদের নিঃশঙ্ক মৃত্যু পথযাত্রা। হয় মুক্তি নয় মৃত্যু মিছিলে হাঁটবে তারা। শোকে সান্ত্বনা নয় বরং শোককে যেন শপথ করার পালা, তাড়িয়ে ফিরছিল তাদের!

রক্তে তখন লেগেছে সর্বনাশের নেশা! আজ জীবনের বিনিময়ে জীবন, রক্তের বিনিময়ে চাই রক্তের প্রতিশোধ! জেলায় ব্রিটিশ বিরোধী সশস্ত্র আন্দোলনে, প্রথম টার্গেট হিসেবেই উঠে এল জেমস পেডির নাম। ৭ এপ্রিল ১৯৩১। সন্ধ্যা সাতটা। হ্যারিকেনের স্তিমিত আলোয় জিলা স্কুল (অধুনা, মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুল) এ আমন্ত্রিত পেডি প্রদর্শনীর একটার পর একটা ছবি দেখছেন। সঙ্গে আরও দু’জন রাজপুরুষ। হঠাৎ গুলির শব্দ- দ্রাম! দ্রাম! দ্রাম…! পরপর ছ’বার। তারপর হৈ চৈ, চিৎকার, চেঁচামেচি । এত সশস্ত্র প্রহরী, এত লোকজন তার মাঝেই কিনা এই কাণ্ড! ৯ এপ্রিল আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত হল- ‘মেদিনীপুরের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মিঃ পেডির মৃত্যু’। ঘটনার আকস্মিকতায় সন্ত্রস্ত প্রশাসন ব্যাপক খানাতল্লাশি, গ্রেপ্তার ও নির্যাতন শুরু করে।

ঘটনার ঘোর কাটতে না কাটতেই, ১৯৩১ এর ১৬ সেপ্টেম্বর হিজলি বন্দীনিবাসে পৈশাচিক হত্যালীলা সংগঠিত করল ব্রিটিশ। পিটিয়ে গুলি করে হত্যা করা হল তারকেশ্বর সেন ও সন্তোষ মিত্র নামের দুই বিপ্লবী যুবককে। ঘটনার নিন্দায় ফেটে পড়ল বাংলা। তখন জেলাশাসক ডগলাস। অত্যাচারে কম যাননা তিনিও। এবার বিপ্লবীদের টার্গেট হয়ে উঠলেন তিনি। ১৯৩২ এর ৩০ এপ্রিল। অবশেষে এল সেই দিন। জেলা বোর্ডের সভা শুরু হয়েছে। বিকেল পাঁচটা। সভাপতিত্ব করছেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রবার্ট ডগলাস। আচমকাই দ্রাম! দ্রাম! দ্রাম! তিনবার গুলির শব্দ। তারপর আর কিছুই নেই। পালিয়ে গেলেন দাসপুরের খাঞ্জাপুরের জমিদার আশুতোষ পালের পুত্র প্রভাংশু পাল ( ১৯১৩-২০১৭)। পালানোর চেষ্টা করলেন প্রদ্যোৎও। কিন্ত ভাগ্যের পরিহাস! ধরা পড়লেন দাসপুর থানার চেতুয়া রাজনগর নিবাসী অলিগঞ্জের বাসিন্দা ভবতারণ ভট্টাচার্য এর কনিষ্ঠ পুত্র প্রদ্যোৎ ভট্টাচার্য ( ১৯১৩-১৯৩৩)। পরদিন আনন্দবাজার পত্রিকা লিখল- ‘ মেদিনীপুরের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মিঃ ডগলাস নিহত ‘

মেদিনীপুরের বিপ্লব বিভীষিকা আতঙ্কিত করে তুলেছিল প্রবল পরাক্রমশালী ব্রিটিশ প্রশাসনকেও। কোনো শ্বেতাঙ্গ যুবক আসতে চাইছেন না মেদিনীপুরের জেলাশাসক হয়ে। ১৯৩২ এর ৩ নভেম্বর আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত হল ভারত থেকে ফেরা পুলিশ কমিশনার চার্লস টেগার্টের বিলেতে ফিরে দেওয়া বক্তৃতা। শেষমেশ ব্রিটিশ সরকার অনেক সাধ্য সাধনা করে মেদিনীপুরের জন্য একজন জেলাশাসক খুঁজে বের করল। নাম- বেঞ্জামিন ই. জে. বার্জ। তিনি এসেই সঙ্কল্প নিলেন মেদিনীপুরের কংগ্রেস ও সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনকে ধ্বংস তিনি করবেনই। যা ভাবা তাই কাজ! পুলিশ ও মিলিটারি দিয়ে মেদিনীপুরকে শায়েস্তা করতে তিনি উঠে পড়ে লাগলেন। শুধু মেদিনীপুর সদর নয় কেশপুর থানার মুগবসান, নেড়াদেউল, কোঁয়াই সহ তার লাগোয়া অঞ্চলগুলিও বার্জের কোপদৃষ্টি থেকে রেহাই পেলনা।

১৯৩৩ এর ১২ জানুয়ারি, ডগলাস হত্যা মামলায় প্রদ্যোৎ ভট্টাচার্য এর ফাঁসি হল। ইতিহাস আলোচক গোকুলেশ্বর ভট্টাচার্য তাঁর ” স্বাধীনতার রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম ” বইয়ে লিখেছেন- মিঃ বি. ই. জে. বার্জ তখন জেলাশাসক। প্রদ্যোৎ এর ফাঁসির সময় তিনি হাজির ছিলেন। মঞ্চে ওঠার আগে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘ প্রদ্যোৎ, তুমি প্রস্তুত?’ শান্তভাবে প্রদ্যোৎ বললেন, ‘ এক মিনিট, মিঃ বার্জ! কয়েকটা কথা বলব।’ ‘বেশ বলো’, অনুমতি দিলেন বার্জ। প্রদ্যোৎ বললেন, ‘ কোনো ইউরোপীয়ানকে আমরা মেদিনীপুরে থাকতে দেব না, এই আমাদের সঙ্কল্প। এবার তোমার পালা। তৈরি হও।’

প্রদ্যোৎ ভট্টাচার্য এর ফাঁসির পর আবার ফুঁসে উঠল মেদিনীপুর। ‘পড়ি গেল কাড়াকাড়ি-/ আগে কে বা প্রাণ করিবেক দান, তারি লাগি তাড়াতাড়ি…’ ! মেদিনীপুরে বি ভি র দায়িত্বপ্রাপ্ত হন জ্যোতিষ গুহ। এখন টার্গেট- বার্জ! এবারের অপারেশনের ভার পড়ল ডগলাস হত্যাকাণ্ডের ‘জীবিত শহীদ ‘ প্রভাংশু পাল এবং বল্লভপুরের বাসিন্দা পুরোহিত উপেন্দ্র চক্রবর্তীর পুত্র ব্রজকিশোরের ওপর। তাদের সহযোগী হলেন অনাথবন্ধু পাঁজা, মৃগেন দত্ত, রামকৃষ্ণ রায়, শান্তি সেন প্রমুখেরা।

দেখতে দেখতে এপ্রিল ঘুরে এল। ভীত সন্ত্রস্ত শ্বেতাঙ্গ মায়েদের স্বর ও বিগত দুই এপ্রিলের স্মৃতির কবর থেকে ভেসে এল- ‘ Baby sleep on, another April is coming ‘। কিন্ত কোথায় কি? এবার এপ্রিল এল, আবার ফিরেও গেল। ক্ষমতালিপ্সু অত্যাচারী সাহেব হলে কি হবে, মৃত্যুভয় তো তারও আছে। এবার এপ্রিলেও চেষ্টা চলল, কিন্তু ফল কিছু হলনা। বেরোলেনই না ‘বীরপুঙ্গব’ বাংলো ছেড়ে। যদিও বা কচিৎ-কদাচিৎ বেরোতে শুরু করলেন তাও আবার কড়া প্রহরী বেষ্টনীতে। এদিকে ধৈর্য ধরছেনা মৃগেন দত্ত, শান্তি সেন প্রমুখের। রক্তের নেশায় সে কি অপ্রাপ্তির কাতরতা! ১৯ আগস্ট মেদিনীপুর সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কে বন্যাত্রাণ সমিতির বৈঠকে বার্জ কে হত্যার চেষ্টা করা হলেও তাঁর নাগাল পাওয়া গেলনা।

এসময় বার্জের পাশাপাশি বিপ্লবীদের লক্ষ্য হয়ে ওঠেন তদানীন্তন পুলিশ সুপার ইভানস্ ! বারেবারে ব্যর্থ হচ্ছে লক্ষ্য। ধৈর্যের বাঁধ ভাঙতে শুরু করেছে বিপ্লবীদের। অবশেষে সুযোগ এল। ১৯৩৩ এর ২ সেপ্টেম্বর। জানা গেল টাউন ক্লাবের সাথে মহামেডান স্পোর্টিং এর একটি চ্যারিটি ফুটবল ম্যাচ হবে মেদিনীপুর পুলিশ গ্রাউন্ডে। পুলিশ গ্রাউন্ড শহরের প্রায় একপাশে। যার একদিকে সেন্ট্রাল জেলের আর অন্যদিকে আর্মারি ও আর্মড পুলিশ ব্যারাক। আর এমন সুরক্ষিত মাঠে উপযুক্ত সশস্ত্র পাহারার ব্যবস্থা করেই না বার্জ স্বয়ং টাউন ক্লাবের হয়ে মাঠে নামবেন! সঙ্গে খেলবেন জোনস্ , লিন্টন স্মিথ, জঙ্গী কাপ্তান প্রমুখ রাজপুরুষেরাও।

সবাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এসে পড়লেও, বার্জ দেরি করলেন আসতে। খেলা আরম্ভ হওয়ার পরেই বার্জ মোটর থেকে নেমে ঢুকলেন মাঠে। আর এদিকে ঢোকার সাথে সাথেই পশ্চিম দিকের গোলপোস্টের দিকে অনাথবন্ধু ও মৃগেন খেলোয়াড়দের সঙ্গে মিশে বার্জের কাছাকাছি এসে পজিশন নিলেন । একজন উত্তর, আরেকজন পশ্চিম দিক থেকে। পশ্চিম দিক থেকেই ধেয়ে এল প্রথম গুলিটা; পরেরটা উত্তর দিক থেকে। পশ্চিমের অনাথবন্ধু আর উত্তরের মৃগেন দত্তের গুলিতে ততক্ষণে বার্জ ভূপতিত।

গুলি আর পাল্টা গুলির লড়াইয়ে ছত্রভঙ্গ জনতা, যে যেদিকে পারল লাগাল দৌড়। ব্রিটিশ রাজপুরুষদের মধ্যে একমাত্র জোন্স সাহেবই যা পালাতে পারলেন না। পায়ে গুলি লেগেছিল তাঁর। বার্জ কে ভূপতিত হতে দেখে আবেগ বাঁধ মানলনা অনাথবন্ধু র। ঝাঁপিয়ে পড়ল সে বার্জের বুকে। শত্রুর না শেষ রাখতে নেই! বার্জের বুকের উপর বসে একে একে সবকটি বুলেট চালিয়ে দিল সে মহামহিম বার্জের বুকে। এখন সে হাসছে। আনন্দের না, যেন তৃপ্তির হাসি! যেন প্রতিশ্রুতি রক্ষার সে এক প্রশান্ত হাস্যলহরী! হাসছে মৃগেনও! ওদিকে ততক্ষণে ঘটনার অপরিকল্পনীয় আকস্মিকতার রেশ কাটিয়ে তৎপর হয়ে উঠেছে রাজরক্ষীদল । ওরাও পাল্টা গুলি চালালো- দ্রাম্! দ্রাম্! লুটিয়ে পড়ল বিজয়ের হাসি মাখা মুখ দুই কিশোর। যাদের একজন, সবংয়ের জলবিন্দু গ্রামের ছেলে অনাথবন্ধু পাঁজা (৪.১১.১৯১১- ০২.০৯.১৯৩৩) এবং অন্যজন পাহাড়ীপুরের স্বর্ণব্যবসায়ী বেণীমাধব দত্তের পুত্র মৃগেন্দ্রনাথ দত্ত (১৭.১০.১৯১৫ – ০৩.০৯.১৯৩৩ )। বার্জের বুকের উপর বসা অবস্থায় গুলি চালালে অনাথবন্ধু অকুস্থলেই লুটিয়ে পড়েন এবং মারা যান। অন্যদিকে মৃগেন্দ্রনাথ তখন মৃতপ্রায়। শুধু চলছে স্পন্দন টুকু। যেন পরদিনের সূর্য ওঠার প্রতীক্ষায়…! সূর্য উঠল ফের। অন্ধকার রাত্রি শেষে, আলোর স্বপ্ন নিয়ে বিদায় নিলেন মৃগেন্দ্রনাথ।

এদিকে ঘটনার পরিণতিতে বেজায় ক্ষেপে উঠল ব্রিটিশ প্রশাসন। বার্জ হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত সন্দেহে, ২ সেপ্টেম্বর রাতেই গ্রেফতার হলেন- পেডি হত্যার কাণ্ডারী যতিজীবন ঘোষের ভাই নির্মলজীবন ঘোষ, ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডের কর্মচারী নৃপেন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের ভাইপো সুকুমার সেনগুপ্ত, দেওয়ানি আদালতের কর্মী যদুনাথ ঘোষের পুত্র কামাক্ষ্যাচরণ ঘোষ, জাড়ার জমিদার কিশোরীপতি রায়ের পুত্র সনাতন রায়, শিববাজারের আইনজীবী মনমোহন সিংহের পুত্র নন্দদুলাল সিংহ, বল্লভপুরের ব্রাহ্মণ পুরোহিত উপেন্দ্র চক্রবর্তীর পুত্র ব্রজকিশোর চক্রবর্তী, চিড়িমারসাইয়ের আইনজীবী কেনারাম রায়ের পুত্র রামকৃষ্ণ রায় প্রমুখের সাথে শহরের অগণিত কিশোর, যুবা। পরবর্তীতে বিচারে কারোওর বা হয় দ্বীপান্তর, বিচারপতি এইচ. জি. ওয়েট এর বিচারে ১৯৩৪ এর ২৫ অক্টোবর ফাঁসি হয় ব্রজকিশোর চক্রবর্তী ও রামকৃষ্ণ রায়ের। অনেককে প্রমাণের অভাবে বেকসুর খালাস করা হয়।

এরপর আর কোনো ব্রিটিশ রাজপুরুষই মেদিনীপুরের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এর দায়িত্ব নিতে সম্মত হচ্ছিলেননা। অবশেষে এক অবসরপ্রাপ্ত ব্রিটিশ রাজ কর্মচারীকে পুনর্বহাল করে মুখ রক্ষা করেছিল ব্রিটিশ সরকার। যদিও এরপর পর্যায়ক্রমে ভারতীয় বংশোদ্ভূতরাই এই পদে বহাল ছিলেন। এই সেই রোমহর্ষক রোমান্টিক বিপ্লববাদের আঁতুড়ঘর, শহর মেদিনীপুর। আজও শায়িত বার্জ, এই শহরের মাটিতেই অন্য দুই ইউরোপিয়ান জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পেডি এবং ডগলাসের সমাধির পাশে, ঐতিহাসিক সেন্ট জনস্ চার্চের চত্বরে।                                   ( লেখক শিক্ষাব্রতী, ঐতিহ্য অনুসন্ধিৎসু ও সমাজকর্মী)

- Advertisement -
Latest news
Related news