নিজস্ব সংবাদদাতা: পশ্চিম মেদিনীপুর সীমান্ত ঘেঁষা পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুরে এক যুবককে গুলি করে খুন করার ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়। অনুমান করা হচ্ছে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ এই ঘটনাটি ঘটেছে কারন স্থানীয় কিছু মানুষ জানিয়েছেন ওই সময়ে তাঁরা একটি গুলি ছোঁড়ার মত আওয়াজ পেয়েছিলেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে বুধবার প্রাতঃভ্রমনে বেরুনো মানুষজনই প্রথম মৃতদেহটি আবিষ্কার করে। দু’হাত ছড়ানো মৃতদেহটি চিৎ হয়ে পড়েছিল। তাঁর মাথার পেছনে বাঁদিকে ক্লোজ রেঞ্জ থেকে গুলি করা হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। মাথায় চাপ চাপ রক্ত দেখা গিয়েছে। রক্তের একটি বড় চাপ মৃতদেহ থেকে কিছুটা দুরে কংক্রিটের রাস্তায় লক্ষ্য করা গিয়েছে। যার থেকে মনে করা হচ্ছে যেখানে ওই যুবককে গুলি করা হয়েছিল তার থেকে কিছুটা দুরে গিয়ে পড়েছে যুবক অথবা তাঁকে গুলি করার পর সরানো হয়েছে। মৃতদেহের পাশ থেকে একটি ওয়ানসাটার দেশি পিস্তল পাওয়া গেছে।
পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অমরনাথ কে. জানান, “ঘটনাস্থল থেকে একটি ওয়ান শাটার দেশী পিস্তল উদ্ধার হয়েছে। তবে ময়না তদন্তের পরেই গোটা ঘটনার পেছনে লুকিয়ে থাকা রহস্যের কিনারা হবে।” পুলিশ সুপার আরও বলেন, পুলিশ সুপার জানান, “এই ঘটনায় মৃতের পরিবারের তরফে পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ইতিমধ্যে ঘটনার তদন্তে নেমে কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে গতকাল রাতে কারা কারা ওই যুবকের সঙ্গে শেষবার মেলামেশা করেছে তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ দ্রুত এই খুনের রহস্য উদঘাটন করবে।’
ঘটনায় রীতিমত হতচকিত এলাকার বাসিন্দারা। মৃত যুবক ইঞ্জিন রিকশা ও ছোটখাটো ব্যবসা করে দিনাতিপাত করতেন। কোনও দিন তাঁকে রাজনীতি করতে দেখা যায়নি, মদ ইত্যাদি কোনও নেশাও তাঁর ছিলনা বলেই স্থানীয় মানুষজন জানিয়েছেন। এলাকার বাসিন্দা তপন নায়েক বলেন , ” আমাদের এই এলাকা নির্ঝঞ্ঝাট । কোনও দিনই কোনও রাজনৈতিক বা অন্য অশান্তি হয়নি। তবে এলাকাটি পশ্চিম মেদিনীপুরের সীমান্ত। ওপাশ থেকে কিছু দুষ্কৃতির আনাগোনা রয়েছে। পটাশপুর এলাকায় ছিনতাই করে ফের পালিয়ে যায়। সেই দুষ্কৃতীদের খপ্পরে ও পড়ল কিনা সেটাই রহস্যের। কারন ওরা খুবই সাংঘাতিক।”
স্থানীয় বাসিন্দাদের কেউ কেউ জানিয়েছেন রাত সাড়ে আটটা নাগাদ তাঁরা একটি শব্দ পেয়েছিলেন কিন্তু বাজি ফাটার আওয়াজ মনে করে কেউ বাইরে বেরুননি। এমনইতেই সবে মাত্র বৃষ্টি কেটে যাওয়া দিন বলে ঠান্ডা ছিল। রহস্য আরও ঘনীভূত হয়েছে স্কুল চত্বরে মৃতদেহটি মেলায়। তা’হলে কী স্কুলে কোনও দুষ্কর্ম করার চেষ্টা করার সময় বাপি ওদের বাধা দিয়েছিল? নাকি দুষ্কৃতিদের কাউকে চিনে ফেলায় তারা সরিয়ে দিল বাপিকে? বাপির পরিবার জানিয়েছে, সারাদিনের উপার্জন দেড় হাজার টাকা পরিবারের হাতে দিয়ে সন্ধ্যায় বেরিয়ে গেছিল বাপি। বাড়ি থেকে বেরুনোর পরই কী দুষ্কৃতিদের সাথে জড়িয়ে পড়েছিল সে? এরকমই অনেক প্রশ্ন ঘুরে বেড়াচ্ছে স্থানীয় মানুষদের মনে।