নিজস্ব সংবাদদাতা: সাত সকালে এক অন্ধ যুবকের থেঁতলানো মৃতদেহ উদ্ধারকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গলঘেরা গ্রাম শিরশিতে। শালবনী থানার পিড়াকাটা ফাঁড়ির অন্তর্গত ওই গ্রাম লাগোয়া পারাং নদীর পাড়ে দেহটি পড়েছিল বলে জানা গেছে।

সকালে নিজেদের ক্ষেতের ফসলের পরিচর্যায় যাওয়ার সময় স্থানীয় মানুষজনই প্রথম দেহটি দেখতে পান। তাঁরাই খবর দেন মৃত যুবকের বাড়িতে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে আনা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে ২৬ বছর ওই যুবকের নাম সনাতন হেমরম। ১০০ শতাংশ প্রতিবন্ধী ওই যুবককে পাথর বা ওই জাতীয় কোনও ভারী বস্তুর আঘাতে থেঁতলে মারা হয়েছে। মাথায় একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে। মৃত যুবকের কাকা মঙ্গল হেমব্রম জানিয়েছেন, রবিবার রাত ৮টা নাগাদ খাবার খাওয়ার পর বাড়ির অদূরেই নিজের অপর একটি বাড়িতে শুতে চলে যান সনাতন। এরপর আর বাড়ির লোক কিছুই জানেনা। সোমবার অর্থাৎ আজ সকালে প্রতিবেশীদের কাছ থেকে যুবকের দেহ পড়ে থাকার কথা জানতে পারেন তাঁরা।
যুবক প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় একটি বাড়ি পেয়েছিলেন সরকারি প্রকল্পে। গত ১বছর ধরে সেখানেই থাকতেন। খাওয়ার সময় পুরানো বাড়িতে আসতেন। শনিবারও তাই হয়েছিল। ফলে বাড়ির লোক জানত যে সনাতন ওই বাড়িতেই শুতে গেছে। এরপর তাঁকে ওই বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে নাকি দুটি বাড়ি যাতায়তের মাঝখান থেকেই তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।
সনাতনের কাকা মঙ্গল সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, গত অক্টোবর মাসে গ্রামেই একটি প্রেমের ঘটনায় মেয়ের বাড়ির লোকজন ব্যাপক মারধর করে সনাতনকে। তখন গুরুতর আহত হয় সে। হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে হয় তাঁকে। তখনও পুলিশের কাছে গেছিলেন তাঁরা। পুলিশ সেই সময় সনাতনকে চিকিৎসা করার কথা বলে বাড়ির লোককে। পরে সেই মামলা আর গড়ায় নি। মঙ্গলের অনুমান ওই বাড়ির লোকেরাই এটা করে থাকতে পারে। মঙ্গলের কথায়, ওরা ছাড়া সনাতনের মত অন্ধ মানুষের আর কে শত্রু থাকবে?
ঘটনায় এখনও অবধি কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। বাড়ির লোক ময়নাতদন্তের জন্য মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজেই রয়েছেন। ফিরে গিয়ে তাঁরা অভিযোগ দায়ের করবেন বলে জানিয়েছেন। পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় পুলিশও। কোন পুরানো শত্রুতা এক অন্ধ যুবকের এই পরিণতি ঘটালো খতিয়ে দেখছে পুলিশ।