
নিজস্ব সংবাদদাতা: আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস যেন নিক্তি নিক্তিতে মিলে গিয়েছে। সকাল থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে খড়গপুর মেদিনীপুর থেকে ঘাটাল, চন্দ্রকোনায়। বৃষ্টির দাপটে দিশেহারা পাঁশকুড়া, মেছেদাও আর বেলা বাড়ার সাথে সাথে ঝাঁপিয়ে বৃষ্টি নেমেছে বন্দর শহর হলদিয়ায়। শুধু বৃষ্টি নয় তার সাথে পাল্লা দিয়ে শুরু হয়েছে বাতাসের দাপট বা মৃদুমন্দ ঝড়। উত্তর ভারত থেকে যে পশ্চিমি ঝঞ্জা প্রবেশ করেছিল বুধবার। হঠাৎই গরম বেড়ে তৈরি করেছিল অস্বস্তিকর আবহাওয়া। বৃহস্পতিবার তারই জেরে বর্জ্রগর্ভ মেঘ জমেছিল দুই মেদিনীপুরের মাথায়। শুক্রবার সকাল হতেই ঝাঁপিয়ে পড়েছে তা। বৃষ্টি আর বাতাসের দাপটের সাথে তাই মাঝে মধ্যেই গর্জে উঠেছে মেঘ। স্কুলগুলিতে সরস্বতী পুজোর মন্ডপ সাজানোর আনন্দ মাটি হয়েছে।
শুক্রবার প্রায় একই সাথেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে খড়গপুর ও মেদিনীপুর শহরে। এদিন সকাল ৬টা অবধি গাঢ় কুয়াশার আস্তরন চোখে পড়েছে দুই শহরে। এরপরই কালো মেঘ দখল নেয় খড়গপুর মেদিনীপুরের আকাশ। সকাল ৮টা নাগাদ যেন হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে দুই শহরের আশে পাশের গ্রামীন এলাকাতেও। তারই সঙ্গে লোডশেডিং হয়ে যাওয়ায় ঘরের ভেতরেও ঘুটঘুটে অন্ধকার হয়ে যায়। অনেককেই ইমারজেন্সি অথবা হ্যারিকেন জ্বালাতে হয়েছে।
শালবনী, ঘাটাল, কেশপুর, চন্দ্রকোনা, দাসপুর, গড়বেতা, ডেবরা, পিংলা, সবং, নারায়নগড়, দাঁতন, কেশিয়াড়ীতে। পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া, মেছেদা, কোলাঘাট, তমলুকে বৃষ্টি প্রায় একই সময়ে হয়েছে। হলদিয়া, নন্দীগ্রাম, খেজুরি, দিঘা প্রভৃতি এলাকায় বৃষ্টি শুরু হয়েছে কিছুটা পরে। হলদিয়ায় বৃষ্টি শুরু হয়েছে বেলা ১১টা নাগাদ যা কিনা চলেছে প্রায় বেলা দেড়টা অবধি।
পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার দোকান্ডা, ক্ষীরাই, পশ্চিম কোল্লা, ভাবনীপুর এলাকার ফুলের উপত্যকা তছনছ হয়ে গেছে এই অকাল বৃষ্টিতে। গাঁদা, আ্যস্টর, ক্যালেন্ডুলা, চন্দ্রমল্লিকা, মোরগঝুঁটির বন এলোমেলো হয়ে পড়ে রয়েছে। মাটিতে লুটচ্ছে ডালিয়া, করন, রজনীগন্ধা। মাথায় হাত পড়েছে ফুলের চাষিদের। গত ডিসেম্বর থেকে একের পর এক বৃষ্টিতে নষ্ট হয়েছে ফুল। আর এবার, ২৪ঘন্টা বাদেই সরস্বতীর আরাধনা। বাজারে যখন লাখ লাখ টাকার ফুলের লেনদেন তার আগেই ধুয়ে গেল বৃষ্টি। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে পূর্ব এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের সবজি ক্ষেতের। বিশেষ করে ঘাটাল, দাসপুর, কেশপুর, চন্দ্রকোনা, শালবনী, গড়বেতা, গোয়ালতোড় এলাকার আলু ও চিনেবাদাম চাষের। আলু চাষীরা জানিয়েছেন, বৃষ্টি যদি ২দিন স্থায়ী হয়ে তাহলে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে।
আবহাওয়া দপ্তর অবশ্য জানিয়েছে, ২দিন নয় এই আবহাওয়া স্থায়ী হতে পারে দেড় দিন। শনিবার দুপুরের পর থেকে আকাশ পরিস্কার হয়ে যেতে পারে। যা কিছু ভারী বৃষ্টি হওয়ার শুক্রবারই হবে। শনিবার সকালে খুবই হালকা, ঝিরঝির বৃষ্টি হতে পারে বড়জোর। সেক্ষেত্রে সকালে না হোক দুপুরের পর থেকে সরস্বতী পুজোর আনন্দে মেতে ওঠার অবকাশ পাওয়া যাবে।