শশাঙ্ক প্রধান: মর্মান্তিক শিশু মৃত্যুর স্বাক্ষ্য থাকল পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলা। রোদে দেওয়া লেপের মধ্যে জড়িয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে এক ২বছরের শিশুকন্যার এমনই দাবি মায়ের যদিও পুলিশের সন্দেহ রয়েছে যে লেপে জড়িয়ে এমন মৃত্যু হতে পারে কী না? শিশু মৃত্যুর এই রহস্যজনক ঘটনাটি ঘটেছে পিংলা থানার অন্তর্গত বাখনাবাড় গ্রামপঞ্চায়েতের অন্তর্গত উত্তরবাড় গ্রামে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে মৃত শিশুকন্যার নাম দীপ্তি জানা। গ্রামের এক পরিযায়ী শ্রমিক দেবাশিস জানা ও গৃহবধূ পূজার একমাত্র সন্তান দীপ্তি ।

শিশুর মা পূজা দাবি করেছে , কয়েকদিন ধরেই জাওয়াদের কারনে ক্রমাগত বৃষ্টি হয়েছিল। তারপরের ক’দিনও তেমন করে রোদ ওঠেনি বলে লেপ তোষক স্যাঁতস্যাঁতে ছিল। শনিবার সূর্যের মুখ দেখায় দুপুর বেলায় বাড়ির উঠোনে লেপ রোদে দিয়েছিলেন তিনি। সেই লেপের মধ্যেই খেলছিল শিশুটি। এরপর রান্না করতে শিশুকন্যার মা পূজা ঘরের ভেতর চলে যায়। এদিকে শিশুটি কখন সে ঘুমিয়েও পড়ে। রান্না করতে করতেই স্বামীর সঙ্গে কথা বলছিল পূজা। দেবাশিস মেয়ের কথা জানতেও চায়। পূজা জানায় লেপের ওপর খেলছে সে। কিছুক্ষণ পরে মা বাইরে বেরিয়ে দেখেন মেয়ে লেপের মধ্যে অপদমস্তক জড়িয়ে রয়েছে।
পূজার দাবি এরপরই তাড়াহুড়ো করে লেপ ছাড়িয়ে ছেলেকে বের করে তিনি দেখেন ছেলে নাড়াচাড়া করছেনা। তখনও ঘুমিয়ে আছে মনে করে প্রথমটায় কিছু মনে করেননি। কিন্তু টনক নড়ে একটু পরেই। দেখেন বুক ওঠানামা করছেনা ছেলের। নাকের কাছে হাত দিয়ে দেখেন শ্বাসপ্রশ্বাস পড়ছেনা। এরপরই চিৎকার করে ওঠেন মা। ছুটে আসেন মায়ের ঠাকুমা, প্রতিবেশীরা। কিছুক্ষন পরে খবর পেয়ে আসেন বাবাও। নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে। তিনিই জানিয়ে দেন মৃত্যু হয়েছে দীপ্তির। যদিও পুলিশ এই দাবি মানতে নারাজ কারন পুলিশের দাবি, লেপে জড়িয়ে দমবন্ধ হয়ে ২বছরের শিশুর মৃত্যু হতে পারেনা। এর পেছনে অন্য রহস্য রয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে দেবাশিস ও পূজার বিয়ে হয় বছর তিনেক আগে। দীপ্তি তাঁদের একমাত্র সন্তান। দেবাশিসের মা ও বাবা রয়েছেন। বাবাও রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। ঘটনার সময় তিনি কাজে গেছিলেন অন্যত্র। দেবাশিসের মা অর্থাৎ পূজার শাশুড়ি বাড়ির কয়েকটি ছাগল নিয়ে সামান্য দূরত্বে চরাতে গেছিলেন। এরই মধ্যে ঘটে যায় এই ঘটনা ঘটে গেছে ফলে প্রত্যক্ষদর্শী কেউ ছিলেননা। পুলিশ মৃতদেহ সংগ্ৰহ করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে মা কে। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা অন্য কোনও কারণে মৃত্যু হয়েছে মেয়েটির।