নিজস্ব সংবাদদাতা: করোনার তৃতীয় ধাক্কায় ফের নতুন করে বন্ধ হয়ে গেল রাজ্যের পর্যটনকেন্দ্র গুলি। সোমবার থেকেই রাজ্য জুড়ে শুরু হয়ে যাচ্ছে আংশিক লকডাউন। বিধিনিষেধের কড়াকড়ি ফলে দিঘা ছাড়তে শুরু করছেন পর্যটকরা। রবিবার এমনিতেই একটা বড় অংশের পর্যটকদের ফেরার কথা ছিল তার ওপর বিকাল ৪টার সময়

রবিবার সরকারি ঘোষণার পর জামা কাপড় গুছিয়ে নিতে যতটা সময় লাগে সেইটুকুই ব্যাস। তারপরই দলে দলে মানুষ ভীড় করতে শুরু করেছেন ওল্ড দিঘার বাসের ডিপো কিংবা কাউন্টার গুলিতে। কেউ চাইছেন ২টা টিকিট, কেউ বা ৪টা। কলকাতার বেহালার যুবক একটি প্রাইভেট ফার্মের অরিন্দম সেন আর স্ত্রী চন্দ্রিমা জানালেন, ‘খুব ঠকে গেলাম জানেন। ২৫শে ডিসেম্বর থেকে ১লা জানুয়ারির ভীড় কাটাতে আজই সকালে এসে পৌঁছেছিলাম। ওই সময়টা ২জনেই ফার্মে কাজ করে লম্বা ছুটি ম্যানেজ করেছিলাম একটু নিরিবিলিতে কাটাবো বলে। কিন্তু বিধি বাম। কাল সকালের জন্য রিস্ক নিচ্ছিনা। আজই ফিরছি।’
এদিকে নতুন করে পর্যটনকেন্দ্রগুলি বন্ধ করার ঘোষণায় মাথায় হাত পড়েছে হোটেল মালিকদের। প্রথমদফার লকডাউন বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল হওয়ার পর রাজ্যের বিভিন্ন জায়গার সঙ্গে দিঘাও চালু হয়ে গিয়েছিল ঠিকই কিন্তু ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে ব্যাপক ক্ষতি হয় দিঘার। সৈকত শহর পুরোপুরি তছনছ হয়ে যায়। ফলে পর্যটক আসা কমে যায় দিঘায়। সম্প্রতি সরকারের তরফে শতাধিক কোটি টাকা ব্যয় করে ফের সাজিয়ে তোলা হয় দিঘাকে। আবারও ভিড় জমতে শুরু করেছিল দিঘায় যার সর্বোচ্চ ভীড়ের প্রতিফলন ঘটেছিল কয়েকদিন আগে ২৫শে ডিসেম্বর থেকে।
২৫ শে ডিসেম্বর থেকে বর্ষবরণ অবধি থিকথিকে ভীড় ছিল দিঘায়। হোটেল মালিকরা আশা করেছিলেন এই ভীড়ে ভর করেই দিঘা জমে উঠবে শীতের মরসুম থেকে বছরভর। কিন্তু সেই আশায় জল পড়ল ঘোষিত বিধি নিষেধের ফলে। হোটেল মালিক থেকে শুরু করে ছোট বড় সমস্ত ব্যবসায়ীরই মাথায় হাত পড়েছে এই ঘোষণায়। দিঘার ৭০০ হোটেলের মধ্যে কমবেশি সব হোটেলেই আগামী আরও কয়েকটা দিনের অগ্রিম বুকিং ছিল কিন্তু সবই ক্যানসেল হতে চলেছে অবধারিত ভাবেই।
দিঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী বলেন, ‘ দেখুন হোটেল-রেস্টুরেন্ট বন্ধ না থাকলেও পর্যটকদের বাইরে বেরানো বারণ। ফলে তাঁরা থাকবেন কেন? যে কারণে ভ্রমণ কাটছাঁট করে পর্যটকরা বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন। যা পরিস্থিতি সোমবার দুপুরের পর দিঘা পর্যটকশূন্য হয়ে যাবে।’ দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের প্রশাসক মানসকুমার মন্ডল বলেন, ‘ সরকারি নির্দেশ মতো সোমবার থেকে দিঘার সমস্ত বিনোদন পার্ক বন্ধ রাখা হচ্ছে। সৈকতে ঘোরাঘুরিও বন্ধ রাখা হচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রচার করা হচ্ছে।’ সব মিলিয়ে সোমবার থেকে আবার খাঁ খাঁ করতে চলেছে দিঘা।