শশাঙ্ক প্রধান: হাতে সাইকেল চালানো! হ্যাঁ, তাছাড়া উপায় কী? তাঁর সাইকেলটাই অদ্ভুত, নেই চেন, নেই ব্রেক, নেই সীট, এমনকি গিয়ারও নেই। এমন সাইকেল হাত ছাড়া চলে কী করে? দেহটি হ্যান্ডেলের ভরে রেখে সামনের চাকার ওপর ঝুঁকে পড়ে দুটি হাত দিয়ে চাকা গড়িয়ে সাইকেল এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।

ডেবরার বালিচক নেতাজি ক্লাব সংলগ্ন এলাকা থেকে বেলা ১০টা ৪৫যাত্রা শুরু করেছিলেন দেবেন্দ্র।রাজ্যের কারিগরী শিক্ষা মন্ত্রী তথা ডেবরার বিধায়ক সবুজ পতাকা নেড়ে এই সাইকেল যাত্রা শুরু করার সঙ্কেত দেন। উপস্থিত ছিলেন পিংলার সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক বিশ্বরঞ্জন চক্রবর্তী, ডেবরার আইসি কৃষ্ণেন্দু হোতা, এসডিপিও গোবিন্দ শিকদার, বিশিষ্ট ফুটবল জাগলার মনোজ মিশ্র, বিকাশ ভূঞ্যা-সহ বিভিন্ন আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধিরা। সেই সাইকেল দশগ্রাম পৌঁছালো দুপুর ১টা বেজে ৪৫ মিনিটে। সেখানে তখন উপস্থিত সবং থানার ওসি সুব্রত বিশ্বাস, সবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হাজরা বিবি, কর্মাধ্যক্ষ তরুণ মিশ্র সহ বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব। এই ৩৩.৫ কিলোমিটার পথকে নিষ্কণ্টক করার জন্য ডেবরা, পিংলা ও সবংয়ের পুলিশ আধিকারিকদের নেতৃত্বে একটি বাহিনী উপস্থিত ছিল। উপস্থিত থাকতে না পারায় টেলিফোনে শুভেচ্ছা জানান পিংলার বিধায়ক অজিত মাইতি, সবংয়ের বিধায়ক তথা মন্ত্রী ডা: মানসরঞ্জন ভূঞ্যা।
বালিচক পটাশপুর রাজ্য সড়কে এই ৩কিলোমিটার যাত্রায় তিনি একবারের জন্যও থামেননি, সাইকেল থেকে নামেননি। কাউকে স্পর্ষ করেননি, এমনকি কেউ তাকেও স্পর্ষ করেননি। শুরু থেকে শেষ অবধি একটানা হাতে গড়ানো চাকার ওপর ভর করেই সাইকেল গড়িয়েছে তরতর করে। ১৯৯৪ এবং ২০১৮ সালে সাইকেলে করেই ভারত ভ্ৰমন করেছেন দেবেন্দ্র। আন্দামান নিকোবর ছাড়া ভারত ভূখণ্ডের প্রতিটি রাজ্যে তাঁর সাইকেলের চাকা গড়িয়েছে দু’দুবার। একই ব্যক্তির ২বার সাইকেলে ভারত ভ্রমণও একটা রেকর্ডের সমান। শেষ বার অতিক্রম করেছেন ২২,৫০০কিলোমিটার পথ। সাইকেল প্যাশনকেই জীবিকা করেছেন দেবেন্দ্র। ৪৭ বছর বয়সী মানুষটি সাইকেলের ওপরে থেকেই দু’ডজন খেলা দেখাতে পারেন । এবার সবংবাসী অপেক্ষা করছেন তাঁদের প্রিয় সন্তানের গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে ওঠার অপেক্ষায়।