নিজস্ব সংবাদদাতা: ৮ দিনের মাথায় ফের বাসের ধাক্কায় মৃত্যু হল পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ১১৬ বি দিঘা-কলকাতা জাতীয় সড়কে এবং এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ধুন্দুমার পরিস্থিতি তৈরি হল এলাকায়। বাজার করতে যাওয়া স্থানীয় এক ব্যক্তির সরকারি বাসের ধাক্কায় মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠা স্থানীয় জন ভাঙচুর চালায় বাসে।

শনিবার সকাল ৯ টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে কাঁথি থানার অন্তর্গত মহিষাগোট এলাকায়। ১১৬ বি জাতীয় সড়কে মহিষাগোট বাস স্ট্যান্ড লাগোয়া এলাকায় রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন স্থানীয় এক ব্যক্তি। ৩৯ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির নাম পীযুষ মাইতি। ঠিক ওই সময় দিঘা থেকে দুরন্ত গতিবেগে ছুটে আসছিল কলকাতাগামী একটি সরকারি বাস। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ সামনে থাকা একটি গাড়িকে দুরন্তগতিতেই ওভারটেক করতে গিয়ে সজোরে ধাক্কা মারে পীযূষ মাইতিকে। রাস্তার ওপর অনেকটা ওপরে উঠে গিয়ে ছিটকে পড়েন পীযুষ। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর।
চোখের সামনে এই ঘটনা ঘটতে দেখে উত্তেজিত হয়ে ওঠে জনতা। জনতার দাবি স্থানীয় কালতলিয়া এলাকার বাসিন্দা পীযুষ নিজের রাস্তা ধরেই বাজার করতে যাচ্ছিলেন। তাঁর পাশ দিয়ে যাচ্ছিল অন্য একটি গাড়ি। সেই গাড়িটিকেই ওভারটেক করতে গিয়ে ওই বাসটিই পীযূষকে সরাসরি ধাক্কা মারে। জনতার অভিযোগ, সরকারি বাসটি যদি গতিবেগ সামান্য কমাত তাহলে তা চালকের নিয়ন্ত্রণে থাকত এবং পীযূষকে অকালে মরতে হতনা। পীযূষ দুটি নাবালক সন্তান জানার পর ক্ষোভ আরও বাড়ে জনতার।
ঘটনার ধকল কাটিয়ে ওঠার পরই স্থানীয় বাসিন্দারা পথ অবরোধ শুরু করে। বাসটিকে ভাঙচুর করাও হয়। অবরোধের জেরে রাস্তার দু’পাশেই যানবাহন দাঁড়িয়ে পড়ে। দীর্ঘ যানজটের পুলিশ খবর পেয়ে পুলিশ এলাকায় গেলে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। অবরোধকারীরা দাবি করতে থাকেন পীযূষের দুটি নাবালিকা সন্তানদের শিক্ষার দায়িত্বের পাশাপাশি তাঁর স্ত্রীর চাকরির ব্যাবস্থা করতে হবে না হলে পথ অবরোধ তুলবে না তারা।
কাঁথি পুলিশের উপস্থিত আধিকারিক ও পুলিশকর্মীরা বার বার বোঝানোর চেষ্টা করেন যে জনতার দাবি তাঁরা প্রশাসনকে জানাবেন, জনতা যেন অবরোধ তুলে নেন। কিন্তু জনতা কোনো ভাবে তুলতে রাজি হয়নি। এরপরই শুরু হয় পুলিসের সাথে ধস্তাধস্তি, হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। এরপর পুলিশ কে লক্ষ্যে করে ইট ছোড়া হয়। ইটের আঘাতে ৩জন পুলিশ কর্মী জখম হন। এরপরই পাল্টা পুলিশ লাঠিচার্জ করে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ বেধড়ক লাঠি চালিয়েছে পুলিশ। এরপর ওই এলাকা থেকে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। উল্লেখ্য গত ১২ই নভেম্বর এই জাতীয় সড়কের চন্ডিপুর এলাকায় একটি বাস দুর্ঘটনায় ৩জনের মৃত্যু হয়েছিল।