Friday, December 8, 2023

School open after Covid 19: কী ভাবে চালাতে হবে স্কুল? সময়সীমা ও করণীয় নির্ধারন করল সরকার, আপত্তি শিক্ষক সংগঠনগুলির! সাড়ে ন’টা নয়, সাড়ে দশটা থেকে স্কুল চাইছে স্কুলগুলি

- Advertisement -spot_imgspot_img

নিজস্ব সংবাদদাতা: রাজ্যের শিক্ষক সংগঠনগুলির সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই স্কুলের সময়সীমা ও করণীয় বিষয় নির্ধারণ করেছে রাজ্য সরকার। তার প্রতিবাদ জানালো বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন। ১৬ নভেম্বর থেকে রাজ্যে খুলছে স্কুল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠন শুরু হবে স্কুলে। এবার রাজ্য সরকারের তরফে স্কুলের সময়সীমা ধার্য করা হল।
রাজ্যের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, নবম ও একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হবে সকাল ১০ টা থেকে। চলবে ৩:৩০ পর্যন্ত। ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে পৌঁছতে হবে ৯:৩০ টার মধ্যে। দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হবে ১১ টা থেকে। চলবে ৪:৩০ পর্যন্ত। দশম ও দ্বাদশশ্রেণীর ছাত্রীছাত্রীদের স্কুলে পৌঁছতে হবে সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে। এই মর্মে রাজ্য সরকারের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে যা ইতিমধ্যেই স্কুলগুলিকে জানিয়েও দেওয়া হয়েছে।

পাশাপাশি অতিমারি পরিস্থিতিতে স্কুলে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষার্থে বেশ কিছু নির্দেশিকা জারি করে ওয়েস্ট বেঙ্গল সেকেন্ডারি বোর্ড। সেই নির্দেশিকা গুলি হল প্রথমত: সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী, সোম থেকে শনিবার পর্যন্তই স্কুল হবে। তবে কিছুটা সময় সীমার পরিবর্তন করা হয়েছে। দ্বিতীয়ত: এক-একটি ক্লাসকে দুটি বা তার বেশি শ্রেণি কক্ষে ভেঙে বসাতে হবে। পড়ুয়াদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতেই এই সিদ্ধান্ত।তৃতীয়ত: থিওরি ক্লাসের পাশাপাশি প্র্যাকটিক্যাল ক্লাসগুলি নেওয়ার ক্ষেত্রেও এই শর্ত প্রযোজ্য। চতুর্থত: নবম ও একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হবে সকাল ১০ টা থেকে। চলবে ৩:৩০ পর্যন্ত। ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে পৌঁছতে হবে ৯:৩০ টার মধ্যে। দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হবে ১১ টা থেকে। চলবে ৪:৩০ পর্যন্ত।

পঞ্চমত: ক্লাস শুরু হওয়ার অন্তত আধ ঘণ্টা আগে ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে পৌঁছতে হবে। করোনার বিষয়ে অভিভাবক ও পড়ুয়াদের সতর্ক করার দায়িত্বও স্কুলকেই দিয়েছে রাজ্য। করোনা সম্পর্কে অবহিত হতে হবে। কী করা যাবে এবং কী করা যাবে না সে বিষয়ে সতর্ক হতে হবে। ‘ডু অ্যান্ড ডোন্টস’-এরও একটি তালিকা রয়েছে বিকাশ ভবনের স্কুল রিওপেন বুকলেটে। সেখানে বলা হয়েছে, জ্বর হলে কোনও অভিভাবক যেন পড়ুয়াকে স্কুলে না পাঠান। একই সঙ্গে বলা হয়েছে, ক্লাস চলাকালীন একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর পর ক্লাসরুম, ল্যাব বা অন্যান্য ঘরগুলি স্যানিটাইজ করতে হবে। এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, “আমাদের কাজ হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী যেমন বলেছেন, সেই মতো পরিকাঠামো দেখা।” বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার আবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। মুখ্যমন্ত্রী এই সিদ্ধান্ত ঘোষণার আগে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়েছিলেন কি না তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে তাঁর।

অন্যদিকে শিক্ষক মহলের একটি অংশ পঠনপাঠনের সময় নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন। তাঁদের মতে পুরানো নিয়ম অর্থাৎ সাড়ে দশটার সময় স্কুল খোলা এবং ১১টায় ক্লাশ শুরু করাই যথোপযুক্ত ছিল। বিদ্যালয় প্রধানদের সংগঠন ‘অ্যাডভান্স সোসাইটি ফর হেডমাস্টারস হেডমিস্ট্রেসস্’ এর রাজ্য সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, ‘যে দায়িত্ব স্কুল গুলোর উপর ছেড়ে দেওয়া যেতে পারত তা পর্ষদ নিজে করতে গিয়ে অবান্তর ভাবনাকে সামনে নিয়ে আসছে। যে সমস্ত শিক্ষক শিক্ষিকারা দূরদূরান্ত থেকে আসেন তাঁদের পক্ষে বিষয়টা সমস্যার। এমনিতেই গ্রামের স্কুলগুলোতে ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যানুপাতে পর্যাপ্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা নেই। শিক্ষাকর্মী নেই। বহুদিন ধরে নিয়োগ নেই ।বহু বিষয় এর পড়ানোর শিক্ষক শিক্ষিকা নেই। অনেক ছাত্রছাত্রীর পক্ষেও বিষয়টা সমস্যার। অনেকে সকাল বেলায় টিউশন পড়ে, কেউ কেউ অনেক দূর থেকে আসে। এই অবস্থায় আমরা মনে করি বিজ্ঞপ্তি সংশোধিত করে নতুনভাবে সকাল সাড়ে দশটা থেকে বিকেল সাড়ে চারটায় এবং শনিবার দেড়টা পর্যন্ত যে স্বাভাবিক রুটিন ছিল তাকে মান্যতা দিয়ে স্কুল চালানোর ব্যবস্থা করা।’

শ্রী মাইতি আরও বলেন, ‘ তাই আগামী ১৬ ই নভেম্বর থেকে স্কুল খুলতে গেলে অবিলম্বে বিডিও সাহেবের মাধ্যমে স্কুলগুলির একাউন্টে মেরামতির প্রয়োজনীয় অর্থ পাঠিয়ে বাকি কাজ জরুরী ভিত্তিতে সম্পন্ন করতে নির্দেশ দিক রাজ্য শিক্ষা দপ্তর। অন্যথায় স্কুল খোলার আগে অপর্যাপ্ত অর্থ দিয়ে টেন্ডারের মাধ্যমে কন্ট্রাক্টরকে দিয়ে কাজ করাতে গেলে আগামী তিন মাসের মধ্যে এ কাজ সম্পন্ন হবে না এবং সঠিকভাবে সে কাজ হবে না।সুতরাং স্কুল খোলার আগে ন্যূনতম মেরামতি,পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অসম্ভব হয়ে পড়বে। শিক্ষা দপ্তরের শুধুমাত্র নোটিশ হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে কাজ সারলে তৃণমূল স্তর পর্যন্ত তার সুফল পাওয়া অসম্ভব হয়ে উঠবে। আমরা শিক্ষা দপ্তর তথা রাজ্য সরকারের সঙ্গে কোভিদ পরিস্থিতিতে যুদ্ধকালীন তৎপরতার নিয়ে কাজ করতে প্রস্তুত।অবাস্তব,অবান্তর কাজ জোর করে করিয়ে নিতে শিক্ষা দপ্তরের একশ্রেণীর কোন হুমকি-ধমকি আমরা মানবো না। মানসিক সুস্থতা নিয়ে সুন্দর পরিবেশে, সুসম্পর্কের ভিত্তিতে কাজ করতে আমরা সবাই প্রস্তুত। সেই পরিবেশ বজায় রাখতে শিক্ষা দপ্তরের আমলাদের কাছে একান্ত আবেদন থাকছে।’

- Advertisement -
Latest news
Related news