নিজস্ব সংবাদদাতা: খড়গপুরে হুড়মুড়িয়ে ভাঙছে কী
তৃনমূল কংগ্রেস? দু’ দিন আগেই খড়গপুর তৃনমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন একগুচ্ছ নেতা কর্মী। প্রার্থী ঘোষণার পরেও তা প্রত্যাখ্যান করেছেন ২জন। এবার এক ঘোষিত প্রার্থী এবং বিদায়ী কাউন্সিলর সহ বেশ কয়েকজন তৃনমূল নেতা যোগ দিলেন কংগ্রেসে। সোমবার এই কয়েকজন মিলে মেদিনীপুর শহরের জেলা কংগ্রেসের সদর দপ্তরে গিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে কংগ্রেসে যোগ দেন।

উল্লেখ্য তৃনমূলের প্রথম তালিকায় ২৮ নম্বরের ওয়ার্ডের জন্য নাম ঘোষিত হয় তৃনমূল নেত্রী সমিতা দাসের। মহিলা সংরক্ষিত এই আসনটি থেকে প্রথমে নির্দল পরে কংগ্রেস হিসাবে গত ২৫ বছর জিতে আসছেন বর্তমান তৃনমূল রবিশঙ্কর পাণ্ডে যিনি কংগ্রেস পরিচালিত পুরবোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন ১৭বছরের কাছাকাছি। এবার আসনটি মহিলা সংরক্ষিত হওয়ায় পাণ্ডেকে প্রথম তালিকায় ২৬নম্বর ওয়ার্ডে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু দ্বিতীয় এবং চূড়ান্ত তালিকায় রবিশঙ্কর পাণ্ডেকে প্রার্থী করা হয়নি বদলে তাঁর স্ত্রী রিতা পাণ্ডেকে ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী করা হয়। সমিতাকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় ২৬নম্বর ওয়ার্ডে আর এতেই বেঁকে বসেন সমিতা। সমিতার বক্তব্য, ‘ গত একদশক ধরে আমি কাজ করেছি ২৮নম্বর ওয়ার্ডে। আমার পরিচিতি এখানে আমি ২৬নম্বর ওয়ার্ডে যাব কেন?’
অন্যদিকে তৃনমূলের বিদায়ী কাউন্সিলর, ২১ নম্বর ওয়ার্ডের জগদম্বা প্রসাদ গুপ্তা ২০১৫ সাল অবধি ছিলেন কংগ্রেসে। টিকিট না পাওয়া বিজেপি তাঁকে প্রার্থী করে এবং জিতেও যান তিনি। সেই সময় সংখ্যালঘু তৃনমূলকে বোর্ড পাইয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্য জগদম্বাকে পুরানো মামলায় গেঁথে ফেলেন তৎকালীন পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ। একের পর এক পাঁচ বিজেপি কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেন। সেই জগদম্বাকেও এবার প্রার্থী করেনি তৃনমূল। ঠিক তেমনই রেল এলাকার পরিচিত নেতা বান্তা মুরলী কিংবা প্রাক্তন দমকল আধিকারিক শতদল বন্দ্যোপাধ্যায়। শহরে বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিছন্ন ভাবমূর্তি, কর্মোদ্যমের জন্যই তৃনমূল কাউন্সিলর না হওয়া স্বত্ত্বেও তাঁকে পুরপ্রশাসক মন্ডলীতে নিয়েছিল শুধু তাই নয়, সেকেন্ড ইন কমান্ড করা হয়েছিল তাঁকে। টিকিট না পেয়ে তিনিও কংগ্রেসে।
তবে আরও একটি বিষয় মাথায় রাখার যে, এই দলত্যাগীদের সব্বাই বিদায়ী পুরবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রদীপ সরকারের ঘনিষ্ঠ এবং নব্য তৃনমূল বলেই পরিচিত। দলের কোনও গুরুত্বপূর্ণ নেতা না হয়েও শুধুমাত্র ভারতী ঘোষের বদান্যতায় অন্যদলের কাউন্সিলর ভাঙিয়ে তৈরি বোর্ডের চেয়ারম্যান হয়েছিলেন প্রদীপ। সেই প্রদীপকে নিষ্প্রদীপ করার জন্য পুরানো খিলাড়িরা বর্তমানে সচেষ্ট। তাঁর অনুগামীদের দুরে ঠেলে দেওয়াটা কী কোনও কৌশল? প্রদীপ সরকার বিধায়ক পদে নেই, চেয়ারম্যানও নেই, কাউন্সিলর পদেও প্রচন্ড চ্যালেঞ্জের মুখে নিজের ওয়ার্ড ছেড়ে অন্য ওয়ার্ডে দাঁড়িয়ে। না জিততে পারলে তাঁর নাম মুছে। তাঁর অনুগামীদের সরিয়ে দিলে নিঃসঙ্গ হয়ে পড়বেন তিনি। কংগ্রেসের এক জেলা নেতা জানিয়েছেন, ‘৭বছর আগে কংগ্রেসকে আটকাতে দল ভেঙেছিল পুলিশ আর তৃনমূল নেতারা। খেলা শুরু করেছিল ওরা, শেষ করব আমরা। এটা শুধু ট্রেলার, পুরো সিনেমা এখনও বাকি আছে।’