নিজস্ব সংবাদদাতা: ‘স্যার, কোভিড আক্রান্তদের জন্য একটা কেয়ার সেন্টার বানাতে চাই।’ ঘাটালের সাংসদের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরে সাংসদ দেবের ডেবরা বিধানসভা ক্ষেত্রের প্রতিনিধি সীতেশ ধাড়া। কথাটা লুফে নিয়েছিলেন অভিনেতা দেব। তারপর বলেছিলেন, ‘আমার দফতরটাকেই কাজে লাগান।’

মাত্র ৭২ ঘন্টার নোটিশে সেই অসাধ্য সাধন করেছিলেন সীতেশ। গড়ে উঠেছিল শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ১০ শয্যার একটি কোভিড কেয়ার সেন্টার। অক্সিজেনের ব্যবস্থা সহ মৃদু উপসর্গ যুক্ত করোনা আক্রান্তদের জন্য একটি আইসলেশন ব্যবস্থা। কার্যত পশ্চিম মেদিনীপুরে সেটাই ছিল প্রথম বেসরকারি উদ্যোগ। সোমবার তারই স্বীকৃতি মিলল খোদ লোকসভার স্পিকারের কাছ থেকে। অতিমারিতে সাধারণের পাশে দাঁড়িয়ে স্পিকারের কাছ থেকে বন্দিত হলেন বাংলার সনু সুদ দেব অধিকারী। পেলেন দুর্দিনে ভাল কাজের জন্য শংসাপত্র।
জানা গেছে যে যে কাজের জন্য ঘাটাল সংসদীয় ক্ষেত্রের সাংসদ অভিনেতা দেবের জন্য লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছ থেকে এই শংসাপত্র এসেছে তার তালিকায় রয়েছে ঘাটালে নিজের দফতরকে কোভিড কেয়ার সেন্টারে রূপান্তরিত করা, পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরানো,
হাসপাতাল গুলিতে দ্রুত অক্সিজেন ও মাস্ক পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা, অসহায়দের হাতে রেশন পৌঁছে দেওয়া, অতিমারিতে মৃতদের দাহ করার জন্য আলাদা শ্মশান এবং রাস্তায় পড়ে থাকা বৃদ্ধার অস্ত্রোপচার করানোর মতো কাজ। এছাড়াও একাধিক রক্তদান শিবির গড়ে ব্লাড ব্যাঙ্কের শূন্য ভাঁড়ারে কয়েকশ বোতল রক্তের যোগান দিয়েছিলেন তিনি।
তবে সাংসদের ডেবরা প্রতিনিধি সীতেশ ধাড়া আনন্দে আত্মহারা এই কারনে যে লোকসভার স্পিকারের পাঠানো সেই শংসাপত্রে প্রথমেই উল্লেখিত রয়েছে দেব স্যারের হয়ে তাঁর নিজের হাতে গড়ে তোলা কোভিড কেয়ার সেন্টারটি। ‘KGPবাংলা’ কে দেওয়া এক টেলিফোন সাক্ষাৎকারে সীতেশ জানান, স্যারের অনুমতি পাওয়ার পর মাত্র
৭২ ঘন্টা নিয়েছিলাম তাঁর দফতরকে কোভিড সেন্টারে রূপান্তরিত করতে।
বেড গুলো পেতে যেটুকু সময় লেগেছিল। সীতেশ বলেন, সেই সময় ডেবরাতে হু হু করে আক্রান্ত বাড়ছিল। হাসপাতাল উপচে পড়ছিল। তখনই মনে হয় যাঁরা স্বল্প সংক্রমনে আক্রান্ত, মৃদু উপসর্গযুক্ত তাঁদের জন্য যদি একটি পৃথক ব্যবস্থা করা যায় কেমন হয়। হাসপাতালের ওপর থেকেও চাপ কমে। সেই থেকেই ভাবনাটা আসে।’
লোকসভার স্পিকারের দেওয়া সেই শংসাপত্র ট্যুইট করেছেন দেব নিজে। বলেছেন, তিনি শুধুই সাংসদের ভূমিকা পালন করেননি। তাঁর মানবিকতা তাঁকে এই পথে এগিয়ে দিয়েছে। তিনি চেষ্টা করেছেন মাত্র। আশা, তাঁর শংসাপত্র দেখে বাকিরাও অনুপ্রাণিত হবেন। একই সঙ্গে তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন বাকি সাংসদদেরও। যাঁরা তাঁর মতোই দুর্গতদের পাশে দাঁড়িয়েছেন দুর্দিনে। খবরটা পাওয়ার পর খুশি ঘাটালবাসীও। অনেকেই বলেছেন বলিউডের অভিনেতা দয়ালু সোনু সুদের মতই তাঁদেরও একজন সোনু সুদ রয়েছেন যিনি টলিউডে অভিনেতা এবং তাঁদের সাংসদ।