নিজস্ব সংবাদদাতা: শুক্রবার সকালে আরপিএফের (RPF) অতি সক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছিল খড়গপুর তৃনমূল কংগ্রেস। সন্ধ্যায় পুলিশের বিরুদ্ধে সেই অতিসক্রিয়তার অভিযোগ তুলল বিজেপি।

শুক্রবার সন্ধ্যায় খড়গপুর টাউন থানার পুলিশ একটি দোকানে হানা দিয়ে ছোটবড় মিলিয়ে ১৭টি রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার সহ ওই দোকানের কর্মচারীকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশের অভিযোগ ওই দোকানে অবৈধভাবে গ্যাস মজুত করা হত এবং লাইসেন্স ছাড়াই গ্যাস রিফিলিং করা হত। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে গ্রেফতার হওয়া ওই দোকান কর্মচারীর নাম জগগু শঙ্কর। যিনি কিনা ওই দোকানের মালিক ১৯নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী দীপসোনা ঘোষ।
যদিও বিজেপির প্রার্থী তথা খড়গপুর উত্তর মন্ডলের সভাপতি দীপসোনা ঘোষের দাবি, তৃনমূল এখন খড়গপুর পৌরসভা হারানোর আতঙ্কে ভুগছে। কিছুদিন আগেই আমাকে জেলে ভরেছিল ওরা। এবার নতুন করে মামলায় ফাঁসাতে চাইছে। ওই দোকানটি একটি গ্যাস উনুন মেরামতির দোকান।
এক সময় আমার থাকলেও এখন সময় দিতে না পারার জন্য আমি জগগু শঙ্করকে ই দিয়ে দিয়েছি। উনি গরিব মানুষ তাই অনেকেই দোকানটি চালাতে বলেছি। দীপসোনার অভিযোগ যবে থেকে আমি প্রার্থী হয়েছি তবে থেকেই এই খেলা পুলিশকে দিয়ে তৃনমূল খেলছে।
শুক্রবার সন্ধ্যা নাগাদ খড়গপুর শহরের ধ্যান সিং ময়দান লাগোয়া এই দোকানটির পাশাপাশি এই মালিকের একটি গোডাউনেও তল্লাশি চালায় পুলিশ। শহরে বিভিন্ন বেআইনি কারবার রুখতে পুলিশের এই অভিযান সাধুবাদের হলেও ঠিক ভোটের আগেই এই অভিযানকে সন্দেহের চোখে দেখছেন স্থানীয় জনতাও। তাঁদের বক্তব্য এই দোকানটি এক দিন দুদিনের নয়, বছরের পর বছর ধরে রয়েছে। তো এতদিন পুলিশের কী বিষয়টি নজরে পড়েনি? জনতার আরও প্রশ্ন, বেআইনি কারবার তো শুধু এই দোকানেই হয়না। শহরে আরও বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন দোকানে বেআইনি কারবার হয়ে থাকে পুলিশ কী সেখানেও সমান ভাবে সক্রিয়?
অনেকে আবার পুলিশের এই উদ্যোগকে ২০১৫ সালের পুরনির্বাচনের সময় পুলিশের ভূমিকার সঙ্গে তুলনা করছেন। সেই সময় স্বয়ং তৎকালীন পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের নেতৃত্বে বিরোধীদের শায়েস্তা করার কাজে নামার অভিযোগ উঠেছিল। সেই সময় ভোটের আগে বিরোধীদের পাশাপাশি তৃনমূলের অভ্যন্তরে থাকা বিদ্রোহী নেতা কর্মীদের পুলিশ তুলে নিয়ে গিয়েছিল বলে অভিযোগ। যদিও শুক্রবারের ঘটনাকে নির্ভেজাল পুলিশি অভিযান বলেই জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছে, নির্বাচনের প্রাক্কালে অপরাধ ও অপরাধীদের বিরুদ্ধে সাধারণ নিয়ম অনুসারেই অভিযান চালানো হয়। নির্বাচনকে সুষ্ঠভাবে পরিচালনার জন্যই নির্বাচন কমিশনের পরামর্শেই এটা হয়ে থাকে। সেই নিয়ম মেনেই কাজ করছে পুলিশ।
উল্লেখ্য শুক্রবার সকালে RPF অতি সক্রিয় হয়ে ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বস্তির বেআইনি বিদ্যুৎ ও কেবল সংযোগ কেটে দেয়। তৃনমূল প্রার্থী এ পূজা অভিযোগ করেন যে ভোট আসলেই বিজেপির নির্দেশ মেনে রেল কর্তৃপক্ষ এই কাজ করে থাকে মানুষকে চাপে রাখার জন্য। সেখানেও সাধারণ মানুষ প্রশ্ন তুলেছেন, সারা বছর RPF যা চোখে দেখতে পায়না, ভোট আসলেই তা তাদের নজরে পড়ে যায় কী করে?