
নিজস্ব সংবাদদাতা: পচা ভাদ্রের মারাত্মক ভ্যাপসা গরম থেকে মুক্তি দিয়ে ফের শনিবার অবধি বৃষ্টির পূর্বাভাস এল বটে কিন্তু তারই সাথে প্রচন্ড বজ্রপাত ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রাণ কেড়ে নিল দু’জনের। মর্মান্তিক এই ঘটনা দুটি ঘটেছে ঝাড়গ্রাম থানার সেবায়তন এবং আনন্দপুর থানা এলাকার চন্ডীকলা গ্রামে। ঝাড়গ্রাম জেলার মৃত ওই যুব তৃনমূল নেতার নাম দেব কুমার মুদি অন্য দিকে পশ্চিম মেদিনীপুরের গৃহবধূর নাম দিপালী বাগ। দুটি মৃতদেহই পুলিশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।
জানা গেছে এদিন বিকাল সাড়ে ৩টা নাগাদ পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের বর্জ্রগর্ভ মেঘ থেকে প্রচুর বৃষ্টির সাথে বর্জ্রপাতও হয়েছিল। ওই সময় বাড়ি থেকে কিছুটা দুরে বালিশিরা নামক একটি জায়গায় বৃষ্টি আসতে দেখে পরিত্যক্ত ভাঙা বাড়িতে আশ্রয় নেন ঝাড়গ্রামের কেচন্দা বুথের যুব তৃনমূল সম্পাদক দেবকুমার। বৃষ্টি থেকে মাথা বাঁচাতে ওই সময় বাড়িটির মধ্যে দেবকুমার ছাড়াও আরও ৫জন আশ্রয় নিয়েছিলেন। সামান্য একটু জায়গায় গাদাগাদি করে দাঁড়িয়েছিলেন ৬জন। আর দেবকুমার ছিলেন একেবারে সামনের দিকেই। বাজ সরাসরি পড়ে বাড়িটির ওপরেই। ভাঙা বাড়ি ভেদ করেই বাজ ছুঁয়ে ফেলে দেবকুমারের দেহ। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়ে দেবকুমার সহ ৬জন। সবাইকেই উদ্ধার করে ঝাড়গ্রাম হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয় দেব কুমারকে।
অন্যদিকে প্রায় একই সময় আনন্দপুর থানার চন্ডীকলা গ্রামের গৃহবধূ স্থানীয় একটি জঙ্গলে কাঠ কুড়াতে গিয়ে বৃষ্টিতে আটকে পড়েন। জানা গেছে বৃষ্টির হাত থেকে মাথা বাঁচাতে তিনি আশ্রয় নিয়েছিলেন একটি গাছের তলায়। বাজ পড়ে ঠিক ওই গাছটির ওপরেই। মুহূর্তেই ঝলসে যায় দিপালীর দেহ। পরে গ্রামবাসীরা উদ্ধার করে নিয়ে আসে তাঁকে যদিও চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এদিকে আগামী শনিবার অবধি ফের বৃষ্টি ও বজ্রপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। বলা হয়েছে বৃহস্পতিবার থেকে দক্ষিণবঙ্গে বাড়বে বৃষ্টির পরিমাণ। পশ্চিমের জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গে আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি বিরাজ করার সাথে সাথেই বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সম্ভবনা রয়েছে।
হওয়া অফিস জানিয়েছে, মৌসুমী অক্ষরেখা গোরখপুর থেকে পূর্বে সরে হিমালয়ের পাদদেশ সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। শুক্রবার থেকে এটি ক্রমশ দক্ষিণের দিকে সরবে। উত্তরে রাজস্থান এবং দক্ষিণে দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তামিলনাড়ু উপকূলে ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে। দখিনা বাতাসে ভর করে প্রচুর জলীয় বাষ্প ঢুকছে।শুক্রবার নাগাদ নতুন করে একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হবে পশ্চিম মধ্য ও উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায়।