নিজস্ব সংবাদদাতা: শনিবার সাত সকালে সমুদ্রের তীরে একের পর এক ৭ টি জলজ প্রাণীর মৃতদেহ ভেসে আসতে দেখে চাঞ্চল্য ছড়ালো। এই সাতটি প্রাণীর মধ্যে সবচেয়ে আশঙ্কা জাগিয়ে মিলেছে অতি বিপন্নপ্রায় জলজ প্রাণী ইরাবতী ডলফিনের দেহ। যা প্রাণী বিজ্ঞানীদের কাছে রীতিমত উদ্বেগের।

সারা বিশ্বে মোট যে কিছু ইরাবতী ডলফিনের অস্তিত্ব টিকে রয়েছে তার সিংহভাগই রয়েছে বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন সুন্দরবন এলাকায়। স্বাভাবিক ভাবেই এই এলাকায় একটি ইরাবতী ডলফিনের মৃত্যু চিন্তার কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে পরিবেশবিদদের কাছেও। শুধু এই ডলফিনই নয় তারই সঙ্গে ওল্ড দিঘার সৈকতে এদিন নজরে পড়েছে আরও ৬ টি বৃহদাকার জলজপ্রাণীর মৃতদেহ।
বনদপ্তরের প্রাথমিক অনুমান ট্রলার বা কোনও যন্ত্রচালিত জলযানের আঘাত পেয়েই মৃত্যু হয়েছে এই বিপন্ন প্রজাতির ডলফিনটির। জানা গেছে এরা দ্রুতগতির প্রাণী না হওয়ায় প্রায়শঃই যান্ত্রিক জলযানের কাছাকাছি চলে আসে।
তাছাড়া ডলফিনের অন্যান্য প্রজাতির মত এরা গভীর সমুদ্রে থাকেনা। মিষ্টি আর লবণাক্ত জলের মিশ্রণ মোহনা অথবা খাড়ির কাছাকাছি এদের বিচরণ। যে কারনে জলযান ও মাছ ধরার জালে এরা বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়ে। প্রাণীবিদরা বলছেন, বর্তমানে পৃথিবীতে ইরাবতী ডলফিনের সংখ্যা আনুমানিক ৭০০০ এর অধিক যার ৯০ শতাংশই বাংলাদেশের সুন্দরবনের খাড়ি ও সংলগ্ন এলাকায় বসবাস করে।
ইরাবতী নদীর ডলফিন বলা হয়, তবে এটি নদীর ডলফিন নয়, ইরাবতী ডলফিন মহাসাগরের ডলফিন। সমুদ্র উপকূলের কাছাঁকাছি, নদীর সাথে সংযোগস্থলে স্বাদু ও নোনা জলের মিশ্রণ আছে এমন এলাকায় এরা বসবাস করে। স্বাদু পানির নদীতে এদের ছোট ছোট জনসংখ্যায় দেখা যায়, যেমন গঙ্গা নদী এবং মেকং নদী আর ইরাবতী নদী যা থেকে এর নাম হয়েছে ইরাবতী ডলফিন। এদের বিস্তৃতি বঙ্গোপসাগর থেকে নিউ গিনি এমনকি ফিলিপাইন পর্যন্ত, যদিও এরা তীর থেকে বেশি দূরে যায় না। আর যে কারনে অন্যান্য ডলফিনের তুলনায় ইরাবতী ডলফিনের সাথে মানুষের সংঘর্ষের সম্ভাবনা বেশি কারণ অন্য ডলফিনগুলো মহাসাগরের আরও গভীরে থাকে।