নিজস্ব সংবাদদাতা: গত কয়েকদিন ধরেই ভিড়ে ভিড়ে ছয়লাপ হয়েছিল মাদুলিবাবার আস্তানা। যে সে মাদুলি নয়, একেবারে মন্ত্রপূত মাদুলি। হাতের তাগায় কিংবা গলায় ঝুলিয়ে দিলেই বাপ বাপ করে পালাবে করোনা ডেল্টা থেকে ওমিক্রন সবই। দামও নাগালের মধ্যেই বড়লোক হলে ১৫হাজার আর একেবারে নূন্যতম রেট ১০০টাকা।

পুলিশ জানিয়েছে ওই মাদুলিবাবার আসল নাম সৈয়দ আবদুল কাদের। মানুষের অজ্ঞতা আর অন্ধবিশ্বাসকে পুঁজি করে সুতাহাটার রামচন্দ্রপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় নিজের বাড়িতেই ফেঁদে বসেছিলেন, ‘গলায় মাদুলি ঝোলান, আর করোনা থেকে সেরে উঠুন’ -এমন বিজ্ঞাপনী প্রচারে নিরন্তর বুজরুকি কারবার চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। মাদুলি কেনার হিড়িকও পড়ে গিয়েছিল। ১৫ হাজার থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল মাদুলি। সেই মাদুলি কিনতেই ভিড় জমে গিয়েছিল গত ক’দিন ধরেই।
পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্য নকুল ঘাঁটি বলেন, ‘ শুধু করোনা কেন কোনও রোগ অসুখই মাদুলি- কবজে রোগ সারে না। এই সব কাজ থেকে মানুষকে সবসময় বিরত থাকতেই বলে থাকি আমরা৷ এই ঘটনায় স্থানীয় মানুষের অসহায়তা ফুটে উঠেছে ৷ মানুষকে ভুল বুঝিয়ে অর্থ রোজগার করছিলেন ওই অসাধু ব্যক্তি। বিজ্ঞানমঞ্চের পক্ষ থেকে আমরা এই বজরুকির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানিয়েছি পুলিশকে।’ বিজ্ঞান মনস্ক আরেক ব্যক্তি জানিয়েছেন, রোগ বিসুখে মানুষ কিংবা প্রাণীকুলের চূড়ান্ত আশ্রয় বিজ্ঞানই। কিছু অসুখ এমনই সেরে যায়। ভন্ড বাবা কিংবা জ্যোতিষরা মানুষের অজানা বিষয়গুলিকেই পুঁজি করে এই ভাঁওতাবাজির ব্যবসা করে থাকেন।
ঘটনায় সোচ্চার হয়েছেন চিকিৎসক মহলও। তাঁদের বক্তব্য, করোনার চলতি ট্রেন্ডই বলেই দিচ্ছে অধিকাংশ মানুষই অল্পদিনেই কোনও ওষুধ ছাড়াই সেরে উঠছেন। সেটাকে না’হয় মাদুলির গুন বলে চালিয়ে দিল ওই বাবার দল কিন্তু মুশকিল হল যদি কারও ক্ষেত্রে সংক্রমন মৃত্যুর আশঙ্কা নিয়ে আসে তাঁর ক্ষেত্রে বিষয়টা বিপজ্জনক। হলদিয়ার চিকিৎসক প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘ দুঃখজনক ঘটনা। করোনা মোকাবিলায় সব সময়েই চিকিৎসকদের পরমর্শ গ্রহণ করতে হবে।’