নিজস্ব সংবাদদাতা: চারদিকে যখন তৃনমূলের জয়ের ছড়াছড়ি, যখন সাংসদ থেকে বিধায়ক আর পঞ্চায়েত সমিতি থেকে পঞ্চয়েত প্রধান সবই তৃনমূলের তখন সেই তৃনমূলকে কার্যত ধুয়েই দিল সিপিএম। এমনই ঘটনা ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর থানা এলাকার একটি সমবায় সমিতির নির্বাচনে।

ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর ২ নম্বর ব্লকের নিশ্চিন্তপুর এলাকার আদমপুর – ফরিদপুর সমবায় সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। রবিবার ছিল এই নির্বাচন। টানটান উত্তেজনায় ১৪৪ ধারা জারি করে এই নির্বাচন হয়েছিল। বিকাল ৪টার পর শুরু হয় ভোট গণনার ফলাফল ঘোষিত হওয়ার পর দেখা যায় সমবায় বাঁচাও মঞ্চ ২৯ টি আসনে জয়ী হয়েছে। তৃনমূলের প্রতিনিধিরা জয়ী হয়েছেন ১৮টি আসনে। সেখানেও অবশ্য জয়ের ব্যবধান খুবই কম,
মাত্র ৭ থেকে ১২ টি ভোটে সেই জয়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন তৃনমূলের তরফে এই নির্বাচন আটকানোর চেষ্টা হয়। কিন্তু সমবায় বাঁচাও কমিটি আদালতের দ্বারস্থ হওয়ায় শেষ পর্যন্ত আদালতের নির্দেশেই সেই নির্বাচন হয় রবিবার।
কিন্তু এই ‘সমবায় বাঁচাও মঞ্চ’ নাম কেন? উত্তরে মঞ্চের নেতা রঞ্জিত পাল বলেন, কারন এই অঞ্চলে যে সমবায়ের ক্ষমতা তৃনমূল দখল করেছে সেই সমবায় লাটে উঠেছে। কোথাও সমবায় কার্যালয়ে তালা আবার কোথাও সমবায়ের টাকা তছরূপ। ফলে লোন পাচ্ছেননা সাধারণ মানুষ। চড়া সুদে চাষের সময় চাষিকে লোন করতে হচ্ছে মহাজনের কাছ থেকে। একমাত্র ব্যতিক্রম বাম পরিচালিত এই এই আদমপুর – ফরিদপুর সমবায়। তাই এই সমবায় বাঁচাতে সর্বস্তরের মানুষ এগিয়ে এসেছেন রাজনীতির উর্ধ্বে। এমনকি তৃনমূল কংগ্রেসের মনোভাবাপন্ন মানুষরাও।
তেমনই উদাহরণ দিয়ে সমবায় বাঁচাও মঞ্চের নেতারা বলেছেন, এলাকার সাধারণ মানুষ চোখের সামনে দেখেছে আধ কিলোমিটার দূরেই তৃনমূল কংগ্রেস পরিচালিত নিশ্চিন্তপুর সমবায় দপ্তরে তালা পড়ে আছে। কৃষক সাধারণ মানুষ এখন বঞ্চিত সমস্ত সুবিধা থেকে। পাশ্ববর্তী চাঁইপাট সমবায়ে ৭৬ লক্ষ টাকা এবং বেনাই সমবায়ে ৩৬ লক্ষ টাকা বেনিয়মের অভিযোগ তৃণমূল পরিচালিত কমিটির বিরুদ্ধে। এই সমস্ত সমবায়ের অধীন কৃষকরা কৃষি ঋণ পাচ্ছেননা। এই অভিজ্ঞতা থেকেই এখানকার মানুষ তৃনমূল কংগ্রেসের হাত থেকে সমবায় বাঁচাতে মঞ্চ গড়েছিলেন। বিষয়টি মুখ খুলতে রাজী নন স্থানীয় তৃনমূল নেতারা। তবে এক নেতা স্বীকার করেছেন, অন্তর্ঘাত হলেও হতে পারে।