নিজস্ব সংবাদদাতা: এক মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডের মৃত্যু হল ১১জন করোনা আক্রান্তের। শনিবার দুপুরে মহারাষ্ট্রের আহমেদনগরের একটি সরকারি হাসপাতালে সম্পুর্ন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে ICU ইউনিটটি। ঘটনায় আরও ৪জন অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন বলে জানা গেছে।

তাঁরা সহ মোট ৬জন করোনা আক্রান্তকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে অন্য হাসপাতালে। ঘটনার খবর পেয়েই ছুটে গিয়েছে দমকল ও পুলিশ কর্মীরা। আগুন নেভানো সম্ভব হয়েছে বলে জানা গেছে। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে শর্টসার্কিট থেকেই এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধ্বব ঠাকরে এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঘটনার দুঃখ প্রকাশ করে নিহতদের পরিবারবর্গের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন।
গোটা ঘটনায় কার্যত হতভম্ব প্রশাসন। জানা গেছে করোনা সংক্রমনের কথা মাথায় রেখেই সদ্য গড়ে তোলা হয়েছিল এই ICU ইউনিটটি। একটি নবনির্মিত আধুনিক ICU ইউনিটে কী ভাবে এই ভয়ঙ্কর অগ্নিকান্ড ঘটে গেল তা বুঝতে ওই ভবনের ফায়ার অডিট বা অগ্নিসমীক্ষা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী নবাব মালিক।
তিনি বলেন, ‘ ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। যদি কাউকে এই গাফিলতির জন্য চিহ্নিত করা যায় তাকে কঠিনতর শাস্তি পেতে হবে। স্থানীয় জেলাশাসক ড. রাজেন্দ্র ভোঁসলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, “ওই কোভিড ওয়ার্ডে মোট ১৭ জন রোগী ভরতি ছিলেন। তার মধ্যে ১১জনের মৃত্যু হয়েছে। বাকিদের দ্রুত অন্য হাসপাতালের কোভিড ওয়ার্ডে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে শর্টসার্কিট থেকেই এই ঘটনা বলে মনে করা হচ্ছে। হাসপাতালটির কাঠামোর ‘ফায়ার অডিট’ করা হবে। কী কারণে আগুন লাগল তা খতিয়ে দেখা হবে। ‘
আহমেদনগরের বিধায়ক এনসিপি নেতা সংগ্রাম জগতাপ এই দুর্ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন। সেই সঙ্গে দোষীদের শাস্তির আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি নিহতদের আর্থিক সহায়তার কথাও জানিয়েছেন সংগ্রাম। তিনি জানিয়েছেন, ” আহমেদনগরের হাসপাতালের অগ্নিকাণ্ডে বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। অবশ্যই পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। কিন্তু তা করা হবে রাজ্য সরকারের কমিটির তরফে। স্থানীয় জেলা কমিটির তরফে নয়। আমাদের বের করতেই হবে কী করে আগুন লাগল। দোষীদের অবশ্যই শাস্তি দেওয়া হবে।”
ঘটনার সময় অগ্নিকাণ্ডের একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, হাসপাতালের নীচতলা থেকে আগুনের শিখা বেরচ্ছে। সেই সঙ্গে এও দেখা গিয়েছে, কীভাবে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে রোগীদের বের করে আনা হচ্ছে। রোগীদের আত্মীয় স্বজনেরা উদভ্রান্তের মত এদিক ওদিক দৌড়াচ্ছেন। কেউ কেউ হাসপাতাল চত্বরে মাথা খুঁড়ছেন প্রিয়জন বিয়োগের খবর পেয়ে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে নিহতদের বেশিরভাগই বয়স্ক মানুষ। এঁদের অধিকাংশের মৃত্যু হয়েছে ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে অথবা আতঙ্কে হার্ট আ্যটাকে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছেন ‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ও মর্মস্পর্শী এই ঘটনায় মৃতদের পরিবারের প্রতি আমি আমার গভীর ও আন্তরিক শোক জ্ঞাপন করছি। কামনা করছি অসুস্থরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন। এই ঘটনার উপযুক্ত তদন্ত করা হোক এবং দোষির শাস্তি হোক। মূখ্যমন্ত্রী উদ্ধ্বব ঠাকরেও বলেছেন, ঘটনার পেছনে কারও দায় থাকলে রেহাই পাবেনা সে। মৃতদের পরিবার পিছু ৫লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে মহারাষ্ট্র সরকার।