নিজস্ব সংবাদদাতা:

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে দাঁতন মুন্সেফ বা জেএম আদালতের হেডক্লার্কের পাশাপাশি এসিজেএম আদালতের পেশকারের কাজ করতেন স্বপন কুমার দাস। নিয়মিত বাইকে করেই যাতায়াত করতেন তিনি। এদিনও আদালত থেকে বেরিয়ে বাড়ির দিকে রওনা হয়েছিলেন। তখনই এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। কর্মসূত্রে দিনের বেশিরভাগ সময়টাই স্বপনবাবু দাঁতনেই কাটাতেন। সেই দাঁতনেই প্রাণ হারালেন তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন সন্ধ্যা ৬টার কিছু পরে আদালতের কাজ সারার পর নিজের বাড়ি যাচ্ছিলেন স্বপন বাবু। ওই সময় নিয়ন্ত্রণ বিহীন পেছন থেকে তাঁকে ধাক্কা মারে একটি ডাম্পার। স্বপনবাবু বাইক থেকে পড়ে গেলে ডাম্পারটি তাঁর ওপর দিয়ে গড়িয়ে যায়। ফলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। তাঁর পরিচিতরা জানিয়েছেন একাধারে দুটি আদালতের সেরস্তার দায়িত্ব সামলাতে হত প্রতিদিনই স্বপন বাবুর কাজ সেরে ফিরতে দেরি হত। এদিনও দেরি করে আদালত থেকে বেরিয়ে পরিচিতদের সঙ্গে দোকানে চা খেয়ে গল্প গুজব করে রওনা হয়েছিলেন। কিছুটা যাওয়ার পরেই এই ঘটনা ঘটে।
দাঁতন আদালতের সঙ্গে যুক্ত এমন এক আইনজীবী জানিয়েছেন ২০বছরেরও বেশি সময় ধরে আদালতের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন স্বপন কুমার দাস। পাশাপাশি আদালতের জুতো সেলাই থেকে চন্ডীপাঠ সবই করতেন তিনি। দীর্ঘদিন কাজের সুবাদে এবং গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকায় আদালত তাঁর ওপর অধিকমাত্রায় নির্ভরশীল ছিল। যেন আদালতই তাঁর ঘরবাড়ি ছিল। নিজেই আদালতের প্রতিটি জিনিস পরিপাটি করে গুছিয়ে রাখতেন। আদালত কর্মীর পাশাপাশি উকিল কিংবা মুহুরীদের সাথে তাঁর গভীর সখ্যতা ছিল।
এ হেন এক ব্যক্তির মৃত্যুতে শোকে ভেঙে পড়েছেন আদালতের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা। আদালত কী ভাবে চলবে তা নিয়েও দুশ্চিন্তা ব্যক্ত করেছেন তাঁরা। ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনা স্থলে এসে পৌঁছান দাঁতন থানার পুলিশ কর্মীরা। মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য সংগ্ৰহ করার পাশাপাশি ঘাতক ডাম্পার ও দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাইকটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।