নিজস্ব সংবাদদাতা: তুমুল বৃষ্টির সাথে জোরালো পূবালি হওয়ায় সারা দক্ষিণবঙ্গের সাথেই কাঁপছে খড়গপুর মেদিনীপুর। আশঙ্কা বাড়িয়ে আবহাওয়া দপ্তর জানিয়ে দিয়েছে বৃষ্টি চলতে পারে আরও একদিন অর্থাৎ বুধবার অবধি। মঙ্গলবারের জন্য দুই মেদিনীপুরের কমলা ও হলুদ সতর্কতা জারি ছিলই তার সাথে নতুন করে ফের কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরে।

এদিকে টানা দুদিনের বৃষ্টিতে মারাত্মক খারাপ অবস্থা খড়গপুর শহরের নিচু অংশগুলি। গত তিনমাস ধরে পৌর প্রশাসনের নজিরবিহীন গাফিলতির শিকার খড়গপুরবাসীর একাংশ। বর্ষার আগে তো বটেই বর্ষার সময়েও সংস্কার করা হয়নি শহরের নিকাশি ব্যবস্থার। তারই মাশুল দিয়ে চলতি মরশুমে অন্ততঃ তিনবার প্লাবিত হয়েছে শহরের নিচু এলাকা। আবার নতুন করে জল জমতে শুরু করেছে শহরের নিচু অংশগুলি।
খড়গপুর শহরের উত্তরে নতুন করে ভোগান্তিতে পড়েছেন ইন্দা শরৎপল্লী, সারদাপল্লী, রামকৃষ্ণপল্লী, নিউটাউনের বাসিন্দারা। নিচু অংশের রাস্তাগুলি জলে ডুবে গেছে। একই অবস্থা বিদ্যাসাগরপুর এলাকার। তবে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা আনন্দনগরের। এই এলাকায় ফের নতুন করে গৃহবন্দি হয়ে পড়েছেন বেশ কিছু পরিবার। এই এলাকায় রাস্তাঘাটের পাশাপাশি অনেকের ঘরের উঠোন অবধি জলে থইথই করছে। সুভাষপল্লী, ভবানীপুর, দেবলপুর, পাঁচবেড়িয়ার কোনও কোনও অংশে নর্দমার জল আর রাস্তা একাকার হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
খরিদা, মালঞ্চ, নিমপুরার বাসিন্দারাও জানিয়েছেন দীর্ঘদিন নালা নর্দমার সংস্কার না হওয়ায় বৃষ্টির জল নামতেই পারছেনা। একই অবস্থা আরামবাটি এলাকার।
শহরের দক্ষিণে বুলবুলচটি, মীরপুর, তলঝুলি, গোপালনগর, ঝুলি, ঝাপেটাপুর, ছোটট্যংরা, দীনেশনগর, রবীন্দ্রপল্লী, আরামবাটি, আয়মা সর্বত্রই নিচু এলাকাগুলিতে জল জমতে শুরু করেছে। বৃষ্টি যদি চলতে থাকে তবে এই জায়গাগুলোর অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যাবে বলে এলাকার বাসিন্দাদের আশঙ্কা।
প্রায় একই অবস্থা মেদিনীপুর শহরের নিচু অংশগুলির। ধর্মা সংলগ্ন এলাকা, রামকৃষ্ণনগর, হবিবপুরের নিচু অংশ, পালবাড়ি, গণপতিনগর, নজরগঞ্জ ও মহাতাপপুরের নিচু এলাকাগুলিতে জল জমার খবর পাওয়া গেছে। বৃষ্টি চলতে থাকলে এই এলাকাগুলিতে দুর্ভোগ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এদিকে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, সোমবারও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝড় বইবে। প্রবল বর্ষণে নিচু জায়গাগুলিতে জল জমতে পারে। ফলে ফের ভোগান্তির আশঙ্কায় শহরবাসী। কলকাতা ছাড়া উপকূলবর্তী পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং হাওড়া ও হুগলিতে ভারী বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাগুলিতে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস।
আলিপুর সূত্রে খবর, বঙ্গোপসাগরে জোড়া নিম্নচাপের জেরেই দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টি হচ্ছে। আগামী কয়েক দিনও বৃষ্টির হাত থেকে রেহাই নেই। হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, বঙ্গোপসাগরে ঘনীভূত নিম্নচাপের জেরে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ভারী বৃষ্টি হতে পারে। ১৮ অক্টোবর থেকে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত ভারী বৃষ্টির সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে উত্তরবঙ্গেও। ফলে পুজো নির্বিঘ্নে কাটলেও, লক্ষ্মী পুজো অবধি বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করেছে আবহাওয়া দফতর (weather office)। তাই রবিবারের পর সোমবার সকাল থেকেই অঝোর ধারায় বৃষ্টি হয়েই চলেছে। আকাশ কালো করে রয়েছে। খড়গপুর মেদিনীপুর সহ দুই মেদিনীপুরের বেশকিছু এলাকায় দেখা যাচ্ছে বৃষ্টির সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়ার দাপটও। ছবি:অচিন্ত্য ত্রিপাঠী