নিজস্ব সংবাদদাতা: নদী কখনও লাশ লুকায় না, সুবর্নরেখা তো নয়। তাই রবিবার দুপুর আড়াইটা নাগাদ ভসরাঘাট সেতুর তলায় জলে নেমে তলিয়ে যাওয়া সিদ্ধান্ত শঙ্করের দেহ ফিরিয়ে দিল নদী। বুধবার ভোর বেলায় ঘটনাস্থল থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দুরে পাওয়া গেল খড়গপুর শহরের ২৯ বছর বয়সী যুবক সিদ্ধান্তের লাশ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে কেশিয়াড়ী থানার আমলাসাই এলাকায় মাছ ধরতে যাওয়া জেলেরাই প্রথমে লাশটি দেখতে পায়। গত ৩৬ ঘন্টা ধরেই তল্লাশি চলেছিল এলাকায়। ফলে জানতে কারও বাকি ছিলনা। জেলেরা নৌকায় মাছ ধরতে গিয়েই ভেসে খাকা দেহটি সহজেই চিনতে পারে। তাঁরাই খবর দেন পুলিশকে। পুলিশ এবং সিভিল ডিফেন্স কর্মীরা গিয়ে দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠায়।
উল্লেখ্য রবিবার বন্ধুদের সাথে পিকনিক করতে গিয়ে ভসরাঘাটের জঙ্গলকন্যা সেতুর তলায় জলে নেমে তলিয়ে যায় খড়গপুর পৌরসভার ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের ঝুলি সোনামুখীর যুবক সিদ্ধান্ত শঙ্কর। সেই ঘটনাটি দেখতে পেয়ে নদীতে থাকা একটি নৌকা নিয়ে মাঝি ছুটে এসেছিল কিন্তু ততক্ষণে জলে তলিয়ে যায় সে। এরপর স্থানীয় গ্রামবাসীদের কয়েকজন ঘটনাস্থলে খোঁজাখুঁজি করেন। কেউ কেউ জলে ডুবেও তল্লাশি চালান কিন্তু রবিবার খোঁজ মেলেনি তাঁর। সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় সে যাত্রা তল্লাশি বন্ধ রাখা হয়। সোমবার ফের পুলিশের উদ্যোগে শুরু হয় তল্লাশি।
সিভিল ডিফেন্স কর্মীরা একটি বোট নামিয়ে তল্লাশি চালান। এগিয়ে আসেন কয়েকজন গ্রামবাসীও কিন্তু সোমবারও খোঁজ মেলেনি সিদ্ধান্তের। স্থানীয়রা জানিয়েছিলেন জানা যাচ্ছে, জঙ্গলকন্যা সেতুর নীচেই ঘটনাটি ঘটেছে। জলের ওই অংশে গভীরতা মারাত্মক এবং কোথাও কোথাও বালি সরে গিয়ে চোরা খাতের সৃষ্টি করেছে।
যদি তেমন জায়গায় দেহটি ঢুকে গিয়ে কোনও ভাবে খাঁজে বসে গিয়ে থাকে তবে তা খুঁজে পাওয়া মুশকিল। সেক্ষেত্রে দেহটি না ভেসে উঠলে খুঁজে পাওয়া মুশকিল। ঠিক তাই ঘটল। স্থানীয়রা জানিয়েছেন সুবর্নরেখা নদীর তলদেশে জলের সাঙ্ঘাতিক চোরা স্রোত থাকে। সেই স্রোতের টানেই দেহটি ভেসে গিয়েছিল অতদূর। তারপর ফুলে ফেঁপে ভেসে ওঠে। সিদ্ধান্তের দেহটি খড়গপুরে পৌঁছাতেই কান্নায় ভেঙে পড়েছে পরিবার।