নিজস্ব সংবাদদাতা: দীর্ঘ ১৮মাস পর মঙ্গলবার ফের আজ হল বিদ্যালয় ও কলেজগুলির পঠনপাঠন । করোনাকাল স্তিমিত হওয়ার মধ্যেই চালু হল নিউ নর্মাল পাঠ্যজীবন। গোটা রাজ্যের মতই ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে উচ্ছাস ছড়িয়ে পড়েছে খড়গপুর শহরেও। করোনাকাল স্তিমিত হলেও করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা কমে যায়নি। দেশ এবং রাজ্যে আক্রান্তের থাবা আবারও বড় হচ্ছে, বাড়ছে আক্রান্ত করোনা রোগীর মৃত্যুর সংখ্যাও। তাই বহুদিন পরে শিক্ষাঙ্গনে আসতে পারার উচ্ছাসের মধ্যে যেন অবহেলার সম্ভবনা না তৈরি হয় সেই লক্ষ্যে খড়গপুরের একটি বিদ্যালয়ে করোনা সচেতনতার পাঠ দিলেন খড়গপুর শ্রমজীবী পাঠশালার সদস্য সদস্যারা।
মঙ্গলবার খড়গপুর শহরের ৭ এবং ১৯নম্বর ওয়ার্ডের দুটি বিদ্যালয়য়ে হাজির হয়েছিলেন শ্রমজীবী পাঠশালার সদস্যরা। ৭ নম্বর ওয়ার্ডের শ্রীকৃষ্ণপুর হাইস্কুলে এবং ১৯নং ওয়ার্ডে সুভাষপল্লী জনকল্যাণ বিদ্যায়তনে পড়ুয়াদের তাঁরা আবেদন জানান বর্তমান পরিস্থিতিতে বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে এবং বিদ্যালয় থেকে বাড়ি যাওয়া আসার পথে কী ধরনের নিয়মানুবর্তিতা মেনে চলা উচিৎ।

শ্রমজীবী পাঠশালার অন্যতম উদ্যোক্তা শ্যামল ঘোষ বলেন, ‘বিগত প্রায় ১৪ মাস ধরে শতাধিক ছাত্রছাত্রী নিয়ে পাঠশালা চালিয়ে যাচ্ছি আমরা। যাদের কেবলমাত্র স্কুল নির্ভর পড়াশুনা ছিল,টিউশিনি পড়ার ক্ষমতা নেই তাদেরকে নিয়েই চলছে এই পাঠশালা। সেই অভিজ্ঞতাই আমাদের শিখিয়েছে কি পদ্ধতিতে করোনা থেকে নিরাপদে রেখে পড়ুয়ারা পঠন পাঠন চালিয়ে যেতে পারে। আমরা সেই অভিজ্ঞতা বিনিময় করেছি। পাশাপাশি পড়ুয়াদের হাতে মাক্স, স্যানিটাইজারের বোতল, পেন ও চকোলেট ইত্যাদি তুলে দিয়েছি।
উল্লেখ্য এই শ্রমজীবী পাঠশালাটি পরিচালনা করে খড়গপুর তথা অবিভক্ত মেদিনীপুরের বামপন্থী আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা প্রয়াত যতীন মিত্র নামাঙ্কিত স্মৃতি রক্ষা কমিটি। সেই কমিটির সদস্য ও নেতৃত্ব অনিল দাস জানান, ‘পড়ুয়ারা আবারও নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসুক, শিক্ষার্থীদের কোলাহলে গমগম করুক ক্লাস রুম। কিন্তু তারা যেন কোভিড বিধির আওতায় থাকে, নিয়মবিধি মেনে চলে এটা শুধু স্কুল কর্তৃপক্ষের একার দায়িত্ব নয়, দায়িত্ব আমাদের সবার।’
শ্রী দাস আরও বলেন, ‘শুধু বিদ্যালয় প্রাঙ্গনই নয়, প্রাঙ্গনের বাইরেও এই দায়িত্ব পালনে উদ্যোগ নিক সমস্ত সামাজিক, রাজনৈতিক সংগঠনগুলি।’ এই নবীন প্রজন্মই আমাদের ভবিষ্যৎ তাই এই অতিমারি পরিস্থিতি তাদের লালন করাটা আমাদেরও দায়িত্ব। আমরা চেষ্টা করেছি সেই দায়িত্ব পালন করতে। এটা ধারাবাহিক ভাবেই চালানোর চেষ্টা করব।’
এই উদ্যোগে খুশি ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক শিক্ষিকাদের পাশাপাশি অভিভাবকরাও। শিক্ষকদের বক্তব্য, ‘আমরা বড় জোর স্কুলের মধ্যে নজরদারি করতে পারি যেমন অভিভাবকরা করতে পারেন বাড়িতে। কিন্তু তার পরেও এক বৃহত্তর পরিসর থেকে যায়। সেই জায়গায় যদি সামাজিক সংগঠন গুলি দায়িত্ব নেয় তবে সর্বাঙ্গ শক্তিশালী হয়ে ওঠে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই।’