
নিজস্ব সংবাদদাতা: ঠান্ডা পড়েছে মোটামুটি তবুও আইসক্রিম বিক্রি হচ্ছে নাকি দেদার! শহরের বিভিন্ন অলিতে গলিতে সাইকেল নিয়ে ঘুরছে আইসক্রিম বিক্রেতা পেছনে কাঠের পেটি। সুযোগ বুঝে চোখে চোখে কথা। তারপরই প্লাস্টিকে মোড়া সবুজ সুতলিতে মোড়া ছোট ছোট চকলেট বোমা বেরিয়ে পড়ছে। দরদামের কোনও কথা নেই। একদর । গাঁটের টাকা ফেলে চুপচাপ বাজি হস্তান্তর।
মেদিনীপুর শহরের কিছু গলিতে নাকি এমনই ঘটনা ঘটছে। আদালতের কড়া রায়ে শব্দবাজি যখন সম্পুর্ন নিষিদ্ধ, যখন সেই রায়কে বলবৎ করতে শনিবার মেদিনীপুর শহরের বিভিন্ন বাজারে পুলিশ নিষিদ্ধ বাজির সন্ধানে হানা দিচ্ছে তখন সেই মেদিনীপুর শহরেই পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিতে এমনই ঘটনা দেখা গেছে শহরের একটি অংশে।
জানা গেছে এ নাকি বেশ কয়েক বছরের প্র্যাকটিস। শব্দবাজি নিয়ে কড়াকড়ি শুরু হওয়ার পর থেকেই এই রকম বিভিন্ন কায়দায় পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে মেদিনীপুর শহরের বেশ কয়েকটি জায়গার গলিতে গলিতে দুয়ারে বাজি নিয়ে পৌঁছে যায় বেশ কয়েকজন। না, হাঁক মেরে এই বাজি বিক্রি হয়না। বাজির ক্রেতারা আগে থেকেই জানেন আইসক্রিম বিক্রেতার ছদ্মবেশে কখন আসবে বাজি বিক্রেতা। খুবই গোপনিয়তার সঙ্গে বিশ্বস্ত ক্রেতার হাতে তুলে দেওয়া হয় এই বাজি।
এক ক্রেতার কাছ থেকে খবর পান আরেক ক্রেতা। কিনতে ইচ্ছুক হলে তিনিও যোগাযোগ করেন বিক্রেতার সাথে। বাজি চলে আসে তার কাছেও। এভাবেই বেড়ে চলেছে বাজার।
পুলিশ বাজারে বাজারে বাজির সন্ধানে ঘুরে বেড়ায়, তল্লাশি চালায়, বাজি বাজেয়াপ্ত করে অথচ কালীপূজার দিন, তারপরের দিন, ভাইফোঁটা, ছটপূজায় শহরের আকাশ বাজির শব্দে কেঁপে ওঠে, বাতাস ভর্তি হয়ে যায় বারুদ গন্ধে। রহস্যটা বোঝা গেল শনিবার। হঠাৎ কিছু মানুষের হাতে চলে আসা গোপন ক্যামেরার ছবিতে।
ঘটনাক্রমে শনিবারই জেলা জুড়েই পুলিশের উদ্যোগে ব্যাপক অভিযান চলেছে আদালতের রায়কে বলবৎ করার জন্য। সেই মত কোতোয়ালি থানার পুলিশও অভিযান চালায় মেদিনীপুর শহরের সাহাভড়ং বাজার, স্কুল বাজার, ভীমচক, নান্নুরচক এলাকার বাজির দোকানগুলিতে হানা দেয় পুলিশ। ১০ কেজির বেশি বাজি বাজেয়াপ্তও করা হয়েছে। পাশাপাশি বাজি বিক্রেতাদের আদালতের নির্দেশ স্মরণ করিয়ে বাজি বিক্রির ব্যাপারে সতর্ক করা হয় পুলিশের তরফে। কয়েক দিন ধরেই নিষিদ্ধ বাজির উপর মেদিনীপুর শহর এবং শহর লাগোয়া বাজি তৈরির গ্রাম ছেরুয়ায় অভিযান চালিয়েছে কোতোয়ালি থানার পুলিশ। আর সেই শনিবারই এই চোরাকারবার নজরে এল। পুলিশ যখন বাজারে, বাজি তখন দুয়ারে!