নিজস্ব সংবাদদাতা: ৬ দিন আগে খড়গপুর মহকুমা হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ হওয়া রুগীকে উদ্ধার করে বাড়ির লোকের হাতে তুলে দিল পুলিশ। বৃহস্পতিবার খড়গপুর গ্রামীন থানার বেনাপুর থেকে ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে পুলিশ। শুক্রবার পরিবারের লোকেদের ডেকে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে ওই ব্যক্তিকে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে বৃহস্পতিবার বেনাপুর বাজারে ওই ব্যক্তিকে এদিক ওদিক ঘুরতে দেখে সন্দেহ হয় এক ফলের দোকানদারের। তিনিই ওই ব্যক্তিকে ভুলিয়ে আটকে রেখে পুলিশকে খবর দেন। এরপরই খড়গপুর টাউন থানার পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে আনে ওই ব্যক্তিকে।
উল্লেখ্য পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়নগড় থানার নাড়মা এলাকার বাসিন্দা গত ৪ডিসেম্বর হঠাৎই উধাও হয়ে যান খড়গপুর মহকুমা হাসপাতাল থেকে। দিলীপের বাড়ির লোকের অভিযোগ ছিল জ্বর নিয়ে ভর্তি হওয়া দিলীপকে ৪ তারিখ একটি ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। তারপরই অসুস্থতার লক্ষণ দেখা দেয় তাঁর। বিষয়টি দেখার পরই হাসপাতাল চত্বরে থাকা মায়ের কাছে ছুটে যান দিলীপের ছেলে সঞ্জয়। মা কে নিয়ে ফের ওয়ার্ডে ঢুকে আর বাবাকে দেখতে পায়নি ছেলে। দিনভর এদিক ওদিক দেখার পর স্বামীকে না পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন দিলীপের স্ত্রী কাকলী। তাঁকেও ভর্তি করতে হয় ওই হাসপাতালে।
ওই দিন রাতেই একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন দিলীপের পরিবার। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করেন দিলীপ নিজেই হাসপাতাল ছেড়ে চলে গিয়েছেন কিন্তু তা মানতে রাজি হয়নি দিলীপের পরিবার। তাঁরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষর বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তোলেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায় দিলীপ নিখোঁজ হওয়ার সময়কার সিসিটিভি ফুটেজ দেখানো হবে পরিবারকে। কিন্তু গোল বাঁধে সেখানেই। আশ্চর্য জনক ভাবে ওইদিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা অবধি সিসিটিভি ক্যামেরায় কোনও ফুটেজই ধরা পড়েনি। ফলে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয় রুগীর পরিবারের মধ্যে।
সোমবার সিসিটিভি ফুটেজে দিলীপের কোনও ছবি না পেয়ে হাসপাতালে ভাঙচুর চালায় সঞ্জয় এবং তাঁদের এক আত্মীয়। গ্রেপ্তার করা হয় ২জনকে। তারপর থেকে জেল হেফাজতে রয়েছেন তাঁরা। শুক্রবার ওই দুজনের জামিন মঞ্জুর হয়েছে খড়গপুর মহকুমা আদালতে যদিও সময়মত জামিনের কাগজপত্র দাখিল করতে না পারায় দুজনকে জেলেই থাকতে হয়েছে। কাগজপত্র জমা করার পর শনিবার জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার কথা তাঁদের। পুলিশ জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া দিলীপের মধ্যে কিছুটা মানসিক অস্বাভাবিকতা রয়েছে। যে কারনে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে, পথ হারিয়েছেন, ঘরের পথ চিনতে পারেননি। এই মানসিক অসঙ্গতি কী আগে থেকেই ছিল নাকি সেই বিতর্কিত ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরে দেখা দিয়েছে তার পরিস্কার ব্যখ্যা মেলেনি। তবে দিলীপের পরিবার তাঁকে আরও কোনও বড় চিকিৎসক বা হাসপাতালে নিয়ে যেতে মনস্থ করেছে।