নিজস্ব সংবাদদাতা: ফের বঙ্গোপসাগরে ঘনিয়ে উঠেছে। আর তার জেরে আবারও ভাসতে চলেছে খড়গপুর মেদিনীপুর সহ রাজ্যের উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে। বলা হচ্ছে রবিবার থেকেই শুরু হতে চলেছে প্রবল বৃষ্টি। যার জেরে বিপর্যস্ত হয়ে পড়তে পারে দক্ষিনবঙ্গ, জলমগ্ন হতে পারে কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের একাধিক এলাকা।

মঙ্গলবারের পর ফের প্রকৃতির রুদ্ররোষে পড়তে হয় পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়া মহকুমার মহিষাদলের দুই মৎসজীবী পরিবারকে। বুধবার সকালে মহিষাদল থানার বাঁকা এলাকায় রুপনারায়ন নৌকায় নদীতে জাল নিয়ে মাছ ধরছিলেন কয়েকজন মৎসজীবী। সেই সময় হঠাৎই বাজ পড়ে নৌকার ওপরে। গুরুতর আহত হয়ে ৪ জনই লুটিয়ে পড়েন নৌকায়। পরে স্থানীয় মানুষের নজরে এলে দেখা যায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে, অন্য ২জন আহত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। জানা গেছে মৃতরা হলেন সমীর পাল( ৩২), বিশ্বনাথ ভূঁইয়া (২৯)। আহত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন মিলন ভূঁইয়া এবং সেখ ফারুক। আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে মহিষাদল গ্রামীণ হাসপাতালে পরে তমলুক রেফার করা হয়। ঘটনায় এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
এদিকে সরকারি ও বেসরকারি আবহাওয়া দপ্তর গুলির মতামত থেকে জানা যাচ্ছে, একটি নয়, তার পেছনে আরও একটি নিম্নচাপের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বঙ্গোপসাগরে। দুটোই শক্তিশালী হতে পারে। একটি নিম্নচাপের আবার ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ারও হালকা একটা সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর, অর্থাৎ শুক্রবার উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগরে প্রথম নিম্নচাপটি তৈরি হতে পারে। ওই নিম্নচাপটি শক্তি বাড়িয়ে সুস্পষ্ট নিম্নচাপ এমনকি গভীর নিম্নচাপের রূপ নিতে পারে। এর পর সেটি এগিয়ে যাবে ক্রমশ পশ্চিম দিকে।
ওই নিম্নচাপটি ওড়িশা দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করে মধ্য ভারতের দিকে এগিয়ে যাবে। ফলে তার সরাসরি প্রভাব দক্ষিণবঙ্গের ওপরে না পড়লেও ফের ভারী বৃষ্টির কবলে পড়তে পারে রাজ্যের উপকূলবর্তী অঞ্চল। এই নিম্নচাপটি স্থলভাগে ঢুকে গেলে পেছন পেছন আরও একটা নিম্নচাপ তৈরি হতে পারে। ওই নিম্নচাপটি নিয়ে বিশেষ করে চিন্তিত আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা। কারণ সেটি শক্তি বাড়িয়ে অতি গভীর নিম্নচাপের স্তরও পেরিয়ে যেতে পারে।
ফলে কোনও ঝুঁকিই নিতে চাইছেনা নবান্ন। বুধবার তাই দক্ষিণবঙ্গের সব জেলার জেলাশাসকদের নিয়ে বৈঠক করেছেন রাজ্যের মুখ্য সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। কলকাতা পুরসভার কমিশনারকেও বৈঠকে ছিলেন। এই বৈঠকে একাধিক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। মানুষকে উদ্ধার, ত্রাণ মজুত রাখা সহ একাধিক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
জানা গেছে ইতিমধ্যেই পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুরের একাধিক অংশে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এরমধ্যে আরও বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা প্রশাসনের কর্তাদের। পুরো পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন আধিকারিকরা। আর সেই কারণেই দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলাতে লাল সতর্কতা জারি করল নবান্ন। আগামী ২৬ তারিখ অর্থাৎ সোমবার থেকে প্রবল বর্ষণের লাল সর্তকতা জারি করল নবান্ন।
২৪ ঘণ্টার কন্ট্রোল রুম চালু করেছে নবান্ন।