নিজস্ব সংবাদদাতা: মেঘভাঙা বৃষ্টি আর ভূমিধসে বিপর্যস্ত উত্তরাখন্ড। ঘন্টায় ঘন্টায় বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। বুধবার সকালে উদ্ধার হয়েছিল ৪২টি মৃতদেহ। দুপুর না গড়াতেই মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৬ জনে। হুহু করে বাড়ছে সমস্ত নদীর জলস্তর।

ভাইরাল হওয়া সেই ভিডিওতে দেখা গেছে ত্রস্ত হাতিটিকে কখনও নদীর উপরের দিকে কখনও বা নিচের দিকে নামতে দেখা যায়। কখনও দেখা যায় অসহায় ভীত হয়ে শুঁড় তুলে সঙ্গীদের সাহায্য করার জন্য বার্তা পাঠিয়ে আর্তনাদ করতে। কিন্তু সেই মুহূর্তে আশেপাশে কোনও হাতি না থাকায় দলের সাহায্য পায়নি হাতিটি। এরকম প্রায় দু’ঘন্টার লড়াই চালায় প্রকৃতির সঙ্গে।
ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরাখণ্ডের গালুয়া নদীতে। জানা গেছে জলস্তর বেড়ে যাওয়া উত্তরাখণ্ডের হলদুচাওর আর লালকুঁয়ার মধ্যবর্তী গালুয়া নদীর চরে আটকে পড়েছিল ওই হস্তিনী। এরপর ভরা নদী পের হয়ে জঙ্গলে ঢোকার চেষ্টা করতে গিয়ে প্রবল স্রোতের মধ্যে পড়ে যায় হাতিটি। ব্যাপক জলের স্রোত অতিক্রম করতে গিয়ে ক্রমশ জলের ফাঁদে পড়ে ভেসে যাওয়ার উপক্রম হয়।
হাতি জলস্রোতের ফাঁদে আটকে পড়েছে এটা দেখতে পেয়েই তা মোবাইল বন্দি করতে শুরু করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারপর তা ছড়িয়ে দেন বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে। মুহুর্তের মধ্যেই ৮হাজার শেয়ার হয়ে যায় একটি ভিডিও। শেয়ারের পাশাপাশি উত্তরাখণ্ডের এই বিপর্যয়কে মানুষেরই সৃষ্টি বলে কটাক্ষ করা হতে থাকে। হাতিটির জন্য হা-হতাশও করতে দেখা যায় নেটিজেনদের। এরপরই ভিডিওটি নজরে আসে উত্তরাখন্ড বনদপ্তরের আধিকারিকদের। তারপর আসরে নামে বনদপ্তর। বনকর্মী ও আধিকারিকদের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। নদীর অপেক্ষাকৃত অগভীর খাতের মধ্যে দিয়ে হাতিটিকে বাধ্য করা হয় যেতে এবং অবশেষে সেটি নদী পেরুতে সমর্থ হয়।
হলদোয়ানি জেলা বনবিভাগের অধিকর্তা সন্দীপ কুমার জানিয়েছেন, ‘ খবর পাওয়া মাত্রই আমাদের কর্মী ও আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান। তাঁরা সঠিক পথে হাতিটিকে ড্রাইভ করেন। শেষ অবধি নদী পেরিয়ে হাতিটি দেব রামপুরের দিকে রওনা দিয়েছে। তাকে আরও গভীর জঙ্গলে ঢুকিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে ড্রাইভ শুরু করেছেন বনকর্মীরা। হাতিটির ওপর নজরদারি করা হচ্ছে।’ হাতিটি ঠিকঠাক নদী পেরুনোর পরই উল্লাসে ফেটে পড়েন উপস্থিত জনতা। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বনদপ্তর।