নিজস্ব সংবাদদাতা: এ যেন তুমি চল ডালে ডালে তো আমি চলি পাতায় পাতায়! মহার্ঘ্য মোবাইল দোকানের ভেতরে CCTV লাগিয়ে দোকান বন্ধ করে দিব্যি বাড়িতে গিয়ে নাক ডাকিয়ে ঘুমোচ্ছেন মালিক। ভাবখানা এমন দোকানের ভেতরে রয়েছে CCTV ক্যামেরা চুরি করলে ঠিক ধরা পড়বে চোরের ছবি! বাছাধন পালাবে কোথায়?

গত শুক্রবার গভীর রাতে, প্রায় ২টা নাগাদ এমনই ছবি ধরা পড়েছে মেদিনীপুর শহরের হৃৎপিণ্ড বলে পরিচিত কেরানিতলা চত্বরে ফাস্ট লাইফ মোবাইল স্টোরে। রাতের অন্ধকারে দোকানের পেছনে দেওয়াল ভেঙে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ লক্ষাধিক টাকার মোবাইল চুরি করে ও দোকানের ক্যাশ বাক্স থেকে আড়াই থেকে তিন লক্ষ ক্যাশ নিয়ে চম্পট দিল দুষ্কৃতীরা। দোকান মালিক শেখ আনিসুর রহমান বলেন, “দোকানের পেছনের দিকে দেওয়ালের ইট কেটে দোকানের মধ্যে প্রবেশ করে নামি দামী ব্যান্ডেরের মোবাইল নিয়ে চলে গেছে চোরের দল, গোটা দোকান ফাঁকা!
ওই দিন সকাল বেলায় দোকান খোলার পর কান্ড দেখে পেছনে গিয়ে দেখা যায় দোকানের পিছনে পড়ে রয়েছে সমস্ত মোবাইলের প্যাকেটে ও চার্জার। দুষ্কৃতীরা শুধু মোবাইল হ্যান্ডসেট গুলোকে নিয়ে চম্পট দিয়েছে। অর্থাৎ ভার হালকা করার চেষ্টা করেছে চোর অথবা চোরের দল। আনিসুর আরও জানিয়েছেন, দোকানের পিছনের দেওয়াল ভেঙে দোকানের ভিতরে ঢুকে সমস্ত মোবাইল নেবার পর CCTV ক্যামেরার তার কেটে তছনছ করেছে।
যদিও তার মধ্যেই ধরা পড়েছে কিছু ছবি। ঘটনার খবর পেয়েই মেদিনীপুর ঘটনাস্থলে পৌঁছান কোতোয়ালি থানার পুলিশ আধিকারিক ও কর্মীরা। সমস্ত কিছু খুঁটিয়ে দেখে নমুনা ও সূত্র সংগ্ৰহ করেছেন তাঁরা কিন্তু CCTV ফুটেজ দেখে চক্ষু চড়কগাছ! এ কে? চোর নাকি করোনা চিকিৎসক? যেন চুরি করতে নয়, কোনো করোনা রোগীর জটিল অস্ত্রোপচার করতে অপারেশন থিয়েটারে ঢুকছে এক চিকিৎসক
পুজোর মুখেই প্রায় অর্ধকোটির সম্পত্তি চুরি যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় আনিসুর। কী করে এই ধকল কাটিয়ে উঠবেন। মনে একটা সুপ্ত আশাও আছে হয়ত CCTV ফুটেজ থেকে রহস্য কিনারা করতে পারবে পুলিশ। কিন্তু কাজটা যে কতটাই কঠিন তাও অনুমান করা যায়। এদিকে দোকানের পেছনের অংশ দেখেও আঁতকে ওঠার মত।
দোকানের সামনে আর ভেতরে যতটাই ঝাঁ চকচকে, পেছন ততটাই অবহেলিত। পলেস্তারা খসে পড়া, নোনাধরা ইট কেটে সরাতে খুব বেশি কসরৎ করতে হয়নি বোঝাই যাচ্ছে। দোকানদাররা যদি এভাবেই আড়ালে থাকা দিক অবহেলা করেন তবে আরও এমন ঘটনা ঘটতে পারে বলাই বাহুল্য। পুলিশ রাতে রাস্তায়, দোকানের সামনের অংশে টহল দেয়,পেছনের অংশে নয়।