
নিজস্ব সংবাদদাতা: আগামী শনিবার আর রবিবার ফের ভাসতে চলেছে পূর্ব এবং পশ্চিম মেদিনীপুর। আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে শুক্রবার, বিশ্বকর্মা পূজার দিনই বঙ্গোপসাগরে ঘনীভূত হতে চলেছে একটি নিম্নচাপ যা কিনা শনিবার ঝাঁপিয়ে পড়বে বাংলা এবং ওড়িশা উপকূলে আর তার প্রভাব এতটাই বেশি যে গুজরাট থেকে দিল্লী অবধি ভাসতে চলেছে।
ইতিমধ্যেই দিল্লীতে জারি করা হয়েছে কমলা সতর্কতা। শনি এবং রবিবার কী হতে চলেছে বৃহস্পতিবার তারই যেন ট্রেলার দেখল দুই মেদিনীপুরের দুই শিল্প শহর খড়গপুর এবং হলদিয়া। বৃহস্পতিবার বেলা ২টা নাগাদ প্রবল বর্ষণে কার্যত কিছুক্ষনের জন্য জনজীবন স্তব্ধ হয়ে যায় দুই শহরের।
আগামীকাল ১৭ই সেপ্টেম্বর, দুই শিল্প শহরেই চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে বিশ্বকর্মা পূজার। করোনা পরিস্থিতিতে কমবেশি সমস্ত কল কারখানাতেই মন্দার বাজার। দীর্ঘ লকডাউনে পকেটে টান পড়েছে শ্রমিকদের। তবুও তারই মধ্যে সাধ্যমত বিশ্বকর্মার আরাধনার প্রস্তুতি নিচ্ছেন শ্রমিক কর্মচারীরা। খড়গপুরে যেমন রেল কারখানা, লোকোসেড, ওপেন লাইনের পাশাপাশি বিদ্যাসাগর শিল্প তালুক ও সাহাচক সংলগ্ন শিল্পতালুকে শ্রমিক কর্মচারীরা মন্ডপ ও সংলগ্ন এলাকা সাজাতে প্রস্তুতি নিয়েছেন।
হলদিয়াতেও পেট্রোক্যাম, মিৎসুবিসি, আইওসি ছাড়াও ছোটবড় কারখানা গুলির গেটে আয়োজন করা হয়েছে বিশ্বকর্মা আরাধনার। সিটি সেন্টার, টাউনশিপ, দুর্গাচক আর এইচপিএল লিঙ্ক রোড বরাবর অজস্র ছোটবড় মন্ডপ তৈরি হয়েছে। খড়গপুর ও হলদিয়া শহরে তারই চূড়ান্ত প্রস্তুতি ঘন্টা খানেকের জন্য থমকে দিল প্রবল বৃষ্টি।
এদিন বেলা ২টা নাগাদ আচমকাই বৃষ্টি শুরু হয় খড়গপুর শহরে। আইআইটি খড়গপুর, প্রেমবাজার, তালবাগিচা, রবীন্দ্রপল্লী, ঝাপেটাপুর, কৌশল্যা, বোগদা, ইন্দা এলাকা ভাসিয়ে দেয় মাত্র মিনিট কুড়ির বৃষ্টি। বৃষ্টির দাপটে রাস্তায় চলতে থাকা গাড়ির গতিবেগ কমে যায়। পথচারীরা এদিক ওদিক দৌড়াদৌড়ি করতে থাকেন একটু আশ্রয়ের জন্য, মাথা বাঁচানোর তাগিদে। রাস্তাঘাট জলে থৈ থৈ করতে থাকে। যাঁরা বিশ্বকর্মার মন্ডপ সাজানোর কাজ করছিলেন তাঁদের থমকে দাঁড়িয়ে পড়তে হয়।
একই অবস্থা দেখা গেছে হলদিয়া শিল্প শহরেও। হলদিয়াতে অবশ্য বেলা ১১টা থেকেই বড় কালো মেঘ উঁকি মারছিল। সকালের দিক থেকে প্রখর রৌদ্র তাপ অনুভূত হলেও বেলা দেড়টা নাগাদ হলদিয়ার আকাশ দখল নিয়ে নেয় সেই মস্ত কালো মেঘ। এরপর ২টা নাগাদ প্রবল বৃষ্টিপাত ঝাঁপিয়ে পড়ে শহরের ওপর। টাউনশিপ থেকে ব্রজলালচক প্রায় ১০কিলোমিটার জায়গা জুড়ে বৃষ্টি হয়েছে ৪০মিনিটেরও বেশি সময় ধরে। সঙ্গে প্রবল বজ্রপাতের শব্দে কাঁপতে থাকে শিল্পশহর। টিউনশিপ, সিটি সেন্টারের রাস্তার ওপর জল দাঁড়িয়ে যায়।
গত রবিবার থেকে বুধবার সকাল অবধি বৃষ্টি হয়েছে দুই শহরেই। মাঝখানে মাত্র ২৪ঘন্টার ব্যবধানে বৃহস্পতিবারের এই বৃষ্টি যেন ট্রেলার দেখিয়ে দিয়ে গেল। স্বাভাবিক ভাবেই ফের শনিবার থেকে এই দুই শহরে ভারী বৃষ্টিপাত আশঙ্কা বাড়িয়েছে দুই শিল্প শহরের বাসিন্দাদের। ট্রেলারই যদি এরকম হয় তবে আসল সময়ে কী হতে চলেছে?