
নিজস্ব সংবাদদাতা: সোমবার সকাল থেকে দফায় দফায় বৃষ্টি হচ্ছে খড়গপুরে। বৃষ্টি কমলেই বাড়ছে গরমের অনুভূতি। তবে এদিন বেলা ১টা নাগাদ এক পশলা ভারী বৃষ্টিতেই নাভিশ্বাস উঠেছে খড়গপুর শহরের নিচু এলাকা গুলিতে। জলের স্রোত বয়ে গেছে খড়গপুরের দীনেশ নগর, তালবাগিচা, রবীন্দ্রপল্লী, আয়মা, আরামবাটি এলাকায়। নিচু এলাকায় জল জমে নাজেহাল স্থানীয় অধিবাসীরা। মহানালা উপচে জল উঠে পড়েছে রাস্তায়, মানুষের বাড়ির উঠোনে। খড়গপুরের বাসিন্দারা জানিয়েছেন বৃষ্টি শুরু হয়েছে রবিবার রাত থেকেই তবে সোমবার সকাল থেকেই বৃষ্টির পরিমান বেড়েছে। আর সেই বৃষ্টিতেই নতুন করে সমস্যায় পড়েছেন খড়গপুর শহরের বেশ কিছু এলাকার বাসিন্দারা।
ইন্দা আনন্দনগরের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ওটি রোড থেকে খোসলা ইলেকট্রনিক্সের পাশ দিয়ে যে রাস্তা তাঁদের এলাকায় গেছে সেই রাস্তার ওপর জমা জল কমানোর জন্য পৌরসভার তরফে কিছু ইট আর সিমেন্ট ছড়ানোয় রাস্তার অংশ কিছুটা উঁচু হলেও ওই রাস্তা থেকে নিজেদের বাড়িতে ঢোকার ছোট ছোট রাস্তাগুলি ফের গতকাল থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিতে জলের তলায়। একই অবস্থা নিউ টাউনের নিচু এলাকা কিংবা রামকৃষ্ণপল্লী, সারদাপল্লীর।
উল্টো দিকে জল জমেছে বিদ্যাসাগর পল্লীর নিচু এলাকাগুলিতেও।কমবেশি একই চিত্র দেখা যাচ্ছে কমলাকেবিন থেকে নিচের দিকের জনবসতি এলাকাগুলোতেও। বৃষ্টি যদি এভাবেই চলতে থাকে তবে আরও জল জমে অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে। এমনটাই বলছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। নতুন করে জল জমতে শুরু করেছে সুভাষপল্লী ভবানীপুর ও পাঁচবেড়িয়া, দেবলপুরের নিচু অংশে। খরিদারর পেছন দিকে মন্দিরতলা ও শ্রীকৃষ্ণপুর এলাকাতেও জল জমেছে। মালঞ্চর বালাজি মন্দিরের পেছনে মাঠপাড়ার বাসিন্দারাও জলজমার আতঙ্কে ভুগছেন।
আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে ঘনীভূত গভীর নিম্নচাপের দরুন তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় সোমবার সকালেই ওড়িশার চাঁদবালীর কাছে স্থলভাগে প্রবেশ করেছে সেটি। যার জেরে উত্তাল হয়ে উঠেছে সমুদ্র। ওড়িশার উপকূলবর্তী জেলা গুলিতে তুমুল বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এখনও পর্যন্ত পুরীতে সর্বাধিক বৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সেখানে ৫৩০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। একাধিক জায়গায় জল জমে গিয়েছে পুরী শহরের। শুধু পুরী নয়, ব্যাপক বর্ষণ শুরু হয়েছে উপকূল সংলগ্ন চার জেলাতে। পুরী সহ একাধিক জায়গায় তুমুল উত্তাল হয়ে উঠেছে সমুদ্র। ওড়িশা থেকে নিম্নচাপটি ক্রমশ ছত্তিশগড় এবং মধ্য প্রদেশের দিকে সরতে শুরু করায় পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলিতে এই বৃষ্টি চলছে বলে জানানো হয়েছে।
এদিকে আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামীকালও রেহাই পাচ্ছেনা খড়গপুর। উল্টে আগামী ২৪ ঘণ্টায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। এদিন সকালে আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘন্টা অর্থাৎ ১৪ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সকালে মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, কলকাতা, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুরে ঘন্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
এছাড়াও উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়ায় ঘন্টায় ৩০-৪০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ভারী বৃষ্টি হতে পারে পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়ার কোনও কোনও জায়গায়। এছাড়া বাকি জেলাগুলির কোনও কোনও জায়গায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। পরবর্তী ২৪ ঘন্টা অর্থাৎ ১৫ সেপ্টেম্বর বুধবার সকালের মধ্যে বৃষ্টির পরিমাণ কমে যাবে।